দীর্ঘ তিন দশক পর বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আধুনিক সিটি বাস টার্মিনাল চালু হতে যাচ্ছে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। এটি হবে নগরীর তৃতীয় বাস টার্মিনাল। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।

জানা যায়, নগরীর জালালাবাদ ওয়ার্ডের কুলগাঁও বালুচরা এলাকায় ৮ দশমিক ১০ একর জায়গার ওপর নির্মিত হচ্ছে এ টার্মিনাল। বর্তমানে ড্রেন, বাউন্ডারি ওয়াল, ভবন ও ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী জানুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে যাত্রী সেবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে টার্মিনালটি।

নগরে পর্যাপ্ত টার্মিনাল না থাকায় বিভিন্ন স্থানে বাস-ট্রাক রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে যানজট সৃষ্টি করে। নতুন টার্মিনাল চালু হলে এই সমস্যার অনেকাংশে সমাধান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, প্রবেশপথে তিনতলা সুদৃশ্য ভবন, আলাদা সিটি ও আন্তঃনগর বাস টার্মিনাল, ২৫টি যাত্রী বোর্ডিং লেন, ১৪টি ওয়েটিং লেন, বড় আকারের হলরুম, তথ্যকেন্দ্র, নারী-পুরুষের জন্য পৃথক টয়লেট, ২২টি টিকিট কাউন্টার, যাত্রীদের বসার জায়গা, ওয়াইফাই সুবিধা, লাগেজ রুম, ট্যাক্সি বুকিং রুম, ফার্স্ট এইড স্টেশন, রেস্তোরাঁ, এসি যাত্রীদের জন্য আলাদা অপেক্ষা কক্ষ, বাস-ট্রাক মালিকদের অফিস এবং কর্মচারীদের জন্য আবাসন কক্ষ।

উল্লেখ্য, নগরে প্রথম বাস টার্মিনাল নির্মিত হয় কদমতলীতে ১৯৬৬ সালে এবং দ্বিতীয়টি বহদ্দারহাটে ১৯৯৩ সালে। এরপর দীর্ঘ ৩২ বছরেও আর কোনো টার্মিনাল নির্মাণ হয়নি। ২০১৮ সালের অক্টোবরে এই প্রকল্প অনুমোদন পায়; তবে নানা জটিলতায় কাজ শেষ হতে ছয় বছরেরও বেশি সময় লেগে যায়। চসিক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানে কুলগাঁও এলাকায় মোট ২৮ একর জায়গায় টার্মিনালের প্রস্তাব ছিল। তবে প্রাথমিকভাবে ৮ দশমিক ১০ একর জমিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে জমি অধিগ্রহণে ২৬০ কোটি টাকা, ভূমি উন্নয়নে ৩ দশমিক ৩৭ কোটি টাকা, অবকাঠামো উন্নয়নে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং ড্রেনেজ ও ইয়ার্ড নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। টার্মিনালে একসঙ্গে ১৬০টি বাস ও ট্রাক পার্কিংয়ের সুবিধা থাকবে।