আবদুর রহমান সরদার (পঞ্চগড়) : পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদীঘি ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় মেয়ে ও তিন নাতি-নাতনিকে নিয়ে ৩ মাস ধরে পলিথিনের তৈরি ঘরে বসবাস করছেন বিধবা তফুরা বেগম। পলিথিনের ঘরটি মাঠের মাঝখানে হওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। থাকার ব্যবস্থা হলেও সেখানে নেই কোনো টিউবওয়েল-টয়লেট। স্বামী মারা যাওয়ার পর ২০০৬ সালে তফুরা তার মেয়েকে নিয়ে জেমজুট এলাকায় এসে বাড়িভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। কয়েক বছর পর তার মেয়ে শরিফা খাতুনকে বিয়ে দেন। সেখানে তার ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তফুরায় মেয়ের সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি। পরে উপজেলার সাকোয়া এলাকায় আবারও বিয়ে করেন শরিফা। সেই সংসারে তার আরেকটি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিছুদিন পরে তার ২য় স্বামীও তাকে ছেড়ে চলে যায়। তখন থেকে শরিফা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। পরে তফুরা বেগম ভারসাম্যহীন মেয়ে ও তিন নাতি নাতনিকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান। এদিকে মেয়ে মানসিকভাবে বেশি অসুস্থ হওয়ার কারণে অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের কাপড়সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নষ্ট করতে থাকে। এসব ঘটনায় সবাই বিরক্ত হয়ে তাদেরকে ভাড়া বাসা থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে সেই পলিথিনের ঘরে তিন মাস ধরে বসবাস করছেন তারা। তফুরা বেগম বলেন, আমার কোনো জমি জায়গা নেই। এলাকার লোকজন স্থানীয় জসিম উদ্দিন নামে একজনের জমিতে পলিথিন দিয়ে আমাকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও আমরা কোনো সহযোগিতা পাই না। এই ঘরে গরমের সময় প্রচ- গরম করে আর বৃষ্টির সময় ছোট বাচ্চারা খুব ভয় পায়।
ময়দানদিঘী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার বলেন, তাদের বিষয়ে আমার জানা নেই। তারা যদি এই ইউনিয়নের বাসিন্দা হয়ে থাকে তাহলে তো সহযোগিতা পাবে। এখনতো কোনো কিছু দিতে হলে জাতীয় পরিচয় পত্র লাগে। জানি না তাদের আছে কীনা ? সমাজসেবা অফিসার তৌকির আহমেদ বলেন, ওই নারী যদি বিধবা হয় এবং তার মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী হয় সেক্ষেত্রে আবেদন করেলে আমরা ভাতার ব্যবস্থা করে দেব। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, অসহায় বিধবা নারী তফুরা বেগমের ব্যাপারে আমরা অবগত আছি। ময়দানদিঘীতে সরকারি কোনো খাস জমি নেই। থাকলে সেখানে তাকে কিছু করে দেওয়া যেত। আশ্রয়নের যে ঘরগুলো ময়দানদিঘীতে আছে সেগুলোও ফাঁকা নেই। ময়দানদিঘী ইউনিয়নের পাশের কোনো ইউনিয়নে ফাঁকা ঘর থাকলে সেখানে তাদের যাওয়ার সুযোগ আছে। আর যদি তিনি সেখানেই থাকতে চান সেক্ষেত্রে কোনো বৃত্তবান ব্যক্তি যদি তাকে জায়গা দেন তাহলে আমরা টিন দিয়ে ঘর করে দিতে পারি।