নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায় মামলার বাদি ও তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনায় অবশেষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট শাখাওয়াত হোসেনকে প্রধান আসামী করে মামলা নিয়েছে ফতুল্লা থানা পুলিশ। রোববার এজাহার দায়ের করা হলেও পুলিশ এডভোকেট শাখাওয়াতের নাম বাদ দিয়ে মামলা করার জন্য হামলার শিকারদের চাপ দিচ্ছিলো। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাতে নয়জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে আসামী করে এই মামলা (যার নং-৫৬) দায়ের হয়। মামলার বিষয়টি বুধবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। ‘আসামীদের গ্রেফতার করা হবে কিনা ? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তরেদর গ্রেফতারসহ পরবর্তী সকল আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
মামলার আসামীরা হচ্ছেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান (৫০), এডভোকেট শাখাওয়াত হোসেনের তিন জুনিয়র আইনজীবী খোরশেদ আলম (৪০), আলামিন শাহ্ (৩৯), আইনজীবী বিল্লাল হোসেন (৩৮), এডভোকেট শাখাওয়াতের মুহুরি হিরন (৩৮), আদালতে দায়ের করা মামলার বিবাদী ইসমাইল (৪৬), ইসমাইলের ভাই টিটু (৫০), শাহালম (৪৮), রাসেল ব্যাপারি (৩৫)।
হামলায় আহত ইরফান মিয়ার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় ভূইগড়ের সাত্তার সরকারের ছেলে ইসমাইলের কাছে ২৫ লাখ টাকা পান নগরীর কালিরবাজার এলাকার সেনেটারি ব্যবসায়ী ইরফান মিয়া। টাকা চাইলে তারা এডভোকেট শাখাওয়াত হোসেনের হুকুমে তাদের বাসায় এসে হামলা ও হুমকি দিয়ে আসছিলেন। তাই তারা পাওনা টাকা চেয়ে ও হামলা-হুমকির ব্যাপারে আদালতে মামলা করেন। এর জের ধরে গত ২৬ অক্টোবর দুপুর অনুমান ১২টায় এডভোকেট শাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে তার মুহুরি, জুনিয়র আইনজীবী ও আদালতের মামলার বিবাদীরা আদালত প্রাঙ্গনে তাদের উপর হামলা চালায়। মামলায় তাদের পাঁচ বছরের ছেলে আব্দুল্লাহ, বড় ছেলে জাতীয় বক্সার জিদান (১৭), ইরফান মিয়া (৪২) ও তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা (৩৮) গুরুতর আহত হন। মামলা তুলে না নিলে তাদের কেটে টুকরো করে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।
গত ২৬ অক্টোর তারা এই এজাহার ফতুল্লা থানায় দিলেও পুলিশ হামলার ঘটনায় মামলা নিতে চাইছিলো না বলে অভিযোগ করে আসছিলেন মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী রাজিয়া সুলতানা। মামলা থেকে মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক এডভোকেট শাখাওয়াত হোসেনের নাম বাদ দিতে তারা রাজিয়া সুলতানাকে চাপ দিচ্ছিলো। রাজিয়া সুলতানা স্বপরিবারে মামলায় বিএনপির আহ্বায়কের নাম সংযুক্ত করতে থানার গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালনও করেছিলেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী রাজিয়া সুলতানা জানান, আজ থানা থেকে আমাকে ফোন করে জানানো হয়েছে, মামলাটি নেয়া হয়েছে। আমরা থানা থেকে মামলার কপি সংগ্রহ করেছি। কিন্তু মামরার কপিতে এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন নামটি কিছুটা অস্পস্ট লেখা দেখা যোচ্ছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি। প্রসঙ্গত, গত ২৬ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ জলো ও দায়রা জজ আদালতরে সামনে মামলার শুনানেিত যাওয়ার সময় রাজয়িা সুলতানা নামরে এক নারী, তার স্বামী ও সন্তানদরে ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় রাজয়িা সুলতানা (৩৮) তার স্বামী মোঃ ইরফান ময়িা (৫০) ও দুই পুত্র জদিান (১৮) এবং আব্দুল্লাহ (৫) আহত হন। আদালত চত্বরে শিশুসহ নারী পুরষের উপর আনজীবীসহ আসামী পক্ষের লোকজনের হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েলে তা ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হয়। অভিযোগ প্রদানের প্রায় ৬০ ঘণ্টা পর পুুলিশ থানায় মামলা হিসাবে রজু করে।