কুমিল্লা সংবাদদাতা : দাউদকান্দি উপজেলার পূর্ব প্রান্তে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ও কালাডুমুর নদীর পাড়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী ইলিয়টগঞ্জ বাজার আজও অবহেলিত। শতবর্ষের পুরোনো এই বাজারটি ‘আইল্লারগঞ্জ বাজার’ নামেও পরিচিত। একসময় গরুর হাট ও পাইকারি ব্যবসার জন্য জেলাজুড়ে খ্যাতি ছিল এ বাজারের। অথচ আজ সামান্য বৃষ্টিতেই কাদামাটিতে ডুবে থাকে প্রধান সড়ক, ভোগান্তির শিকার হন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
বাজারের মাঝখানে সড়কজুড়ে বড় বড় গর্ত ও কাদা-পানি জমে থাকে প্রায় সারা বছর। ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব, ময়লার জন্য নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় প্রতিদিনের আবর্জনা ফেলা হয় মহাসড়কের পাশে ও কালাডুমুর নদীতে। এতে শুধু নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, সেইসাথে কমে যাচ্ছে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ।
সমাজকর্মী এখলাস মুন্সী জানান, প্রতি সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার বসে হাট। পাশ্ববর্তী তিতাস, চান্দিনা, মুরাদনগর, দেবিদ্বার ও কচুয়া উপজেলা থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন এই বাজারে। কিন্তু কাদা-পানির কারণে হাঁটাচলা দুরূহ হয়ে পড়ে, বিশেষ করে কলা ও পানপট্টি এলাকায়। শুধু ব্যবসায়ীরা নন, শিক্ষার্থীরাও ভোগান্তিতে। বাজার সংলগ্ন স্কুলে যাতায়াতে তাদের জামাকাপড় কাদায় নষ্ট হয়ে যায়, জানান অভিভাবকরা।
ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান বলেন, “বৃষ্টি হলেই দোকানের সামনে কাদা জমে যায়, ক্রেতারা আসতে চায় না। ফলে বিক্রি কমে যাচ্ছে, লোকসান গুনতে হচ্ছে।এই বাজারের ইজারা প্রতিবছর কোটি টাকার ওপরে হয়, কিন্তু সে অনুযায়ী উন্নয়ন চোখে পড়ে না।
ভ্যানচালক আবু সাঈদ বলেন, “গর্তে পড়ে গাড়ির যন্ত্রপাতি ভেঙে যায়, মালামাল পৌঁছাতে সমস্যা হয়। দ্রুত রাস্তা মেরামতের প্রয়োজন।”
এ বিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম বলেন, “ইলিয়টগঞ্জ বাজারের সড়ক ও ড্রেনেজ সমস্যার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। ইতোমধ্যে প্রকৌশল বিভাগ পরিদর্শন করেছে এবং একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে।”
অভিযোগ আছে, সড়কটি মেরামতের জন্য একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কাজ শুরু হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ না নিলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। বাজারের ইতিহাস, জনসমাগম এবং রাজস্ব আয়ের দিক বিবেচনায় স্থানীয়রা দ্রুত সড়ক সংস্কার, কার্যকর ড্রেনেজ এবং নির্ধারিত ময়লা ফেলার স্থান নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।