চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত থানা দায়িত্বশীল সমাবেশে গৃহীত এক প্রস্তাবে বলা হয়। বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের আমল থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে শহরের রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা আজ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। ভাঙা রাস্তায় চলাচলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টিতেই নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে, যা নগরবাসীর দৈনন্দিন জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। থানা দায়িত্বশীল সমাবেশে অবিলম্বে যাতায়াতের উন্নয়ন ও রাস্তা ঘাট সংস্কারের জোর দাবি জানান।

অপর এক প্রস্তাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে চট্টগ্রাম নগরীতে চুরি, ডাকাতি, খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তা এখন মারাত্মক হুমকির মুখে। সরকার ও প্রশাসনের উদাসীনতায় অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

সমাবেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মানুষের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম দিন দিন বাড়ছে, অথচ আয় বাড়ছে না — এতে সাধারণ মানুষ নিদারুণ সংকটে পড়েছে। সমাবেশের এক শ্রেণির সুবিধা ভোগী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে প্রশাসনিক মনিটরিং সেলের মাধ্যমে শান্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর যানজট ও ট্রাফিক ব্যবস্থার চরম অবনতির কারণে মানুষকে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে থাকতে হচ্ছে। ফলে মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে এবং হয়রানির শিকার হচ্ছে। সঠিক পরিকল্পনা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা না থাকায় নগরীর পরিবহন ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে বলে গৃহীত প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এতে ট্রাফিক বিভাগকে দায়িত্ব পালন আরও জোরালো ভূমিকা পালন করার আহ্বান।

উক্ত সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের পরিচালনায় উক্ত সমাবেশে বক্তব্যে রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এ কে এম ফজলুল হক প্রমুখ।

উক্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, প্রফেসর মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, আমির হোছাইন, ফখরে জাহান সিরাজী, মাহমুদুল আলম, থানা আমীর ফারুকে আজম, প্রফেসর মুহাম্মদ নুরুন্নবী, মহিউদ্দিন শাহজাহান, আবুল মোকাররম, মাওলানা জাকির হোসাইন, আব্দুল হান্নান, এম এ গফুর, মুহাম্মদ সেলিম, মুহাম্মদ ইসমাঈল, আহমদ খালেদুল আনোয়ার, মাহবুবুর হাসান রুমী, সুলতান আহমদ, অধ্যাপক আলমগীর ভূঁইয়া, নুরুল আলম, ডা. আহমদ রহীম, ড. আ ম ম মাসরুর হোসাইন, সেলিম জামান, ইন্জিনিয়ার রুহুল আমিন প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান এবং জনগণের অধিকার আদায়ে গণআন্দোলন জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।