কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্য ও কালের সাক্ষী ঐতিহাসিক লাহিড়ী বিল্ডিং আজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। কর্তৃপক্ষের উদাসিনতায় রাতের আঁধারে বিল্ডিংটির মূল্যবান দরজা জানালা চুরি হয়ে যাচ্ছে ।

জানা যায়, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সৈনিক ক্ষুদি রাম বসুুর মামার বাড়ি কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রার ঐতিহাসিক লাহিড়ী বিল্ডিং নামে খ্যাত এই ভবনটি। এখানে যদুবয়রা ভূমি অফিস এর কার্যক্রম চলেছে কয়েক বছর। ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত এই বিল্ডিংটি মাধ্যমিক স্কুল হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। ভবনটি ছাড়াও এখানে পুরোনো অনেক ইতিহাস ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

দ্বিতলা বিল্ডিংটির নিচে চারটি রুম ও একটি হল রুম আছে। দ্বিতীয় তলায় দুইটি রুম ও পিছনের বারান্দা রয়েছে। নিচতলার একটি রুম যদুবয়রার ভূমি অফিস হিসাবে কয়েক বছর ব্যবহার হয়। ভবনটির পলেস্তার খসে গেছে, দেয়ালে ও ছাদে জন্মেছে আগাছা। দরজা জানালা নেই। যে কোন সময় ধ্বসে পড়তে পারে চুন শুরকির এই স্থাপনাটি।

অবিভক্ত ভারত বর্ষের পুলিশের ডি আই জি পূর্ণ চন্দ্র লাহিড়ী তার এই বাড়িতে মাঝে মধ্যে আসতেন। তবে পূজো পার্বণে বেশি আসতেন বলে এই জায়গায় সে সময় এক আনন্দ উৎসব চলতো। তাছাড়া এখান থেকেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নির্ভীক সৈনিক ক্ষুদিরাম বসুকে ধরিয়ে দেওয়া হয় বলেও জনশ্রæতি আছে।

বিল্ডিংটি অনেক ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের ধারক এবং বাহক হিসাবে এখনও বিদ্যমান। তবে দিন দিন সংরক্ষণের অভাবে এই বিল্ডিংয়ের ইতিহাস বিলুপ্ত হতে চলেছে। তৎকালীন ব্রিটিশ আমলে চুন,সুরকী দিয়ে তৈরি দ্বিতল ভবন এখন অনেকটাই ঝুঁকির মুখে। অনেক পুরাতন ভবন হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাঁদ দিয়ে পানি পড়ে। তাছাড়া এই ভবনের দরজা এবং জানালার দূর্লভ কাঠ রাতের আঁধারে চুরি হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে বিল্ডিংটির পিছনের দিকে জানালা দরজা না থাকায় পরিত্যক্ত রুমের মধ্যে স্থানীয় উঠতি বয়সের যুবকেরা মাদকদ্রব্য সেবনসহ অসামাজিক কার্যকলাপ ঘটাতে পারে বলে সচেতন মহল মনে করেন। কালের সাক্ষী এই ভবনটি সংস্কার বা রক্ষনাবেক্ষন করার দাবী উঠেছে অনেক আগেই। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ব্যবস্থা নেবেন এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।