বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্র ঘোষিত ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে টাংগাইল জেলা জামায়াত। বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে জেলা আমীর আহসান হাবীব মাসুদ বলেন, জুলাই সনদকে আইনী ভিত্তি দেওয়া না হলে জুলাই বিপ্লব অকার্যকর হয়ে পড়বে।

জেলা আমীর তার বক্তব্যে বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা আধিপত্যবাদ মুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি; পেয়েছি রাজনৈতিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। পেয়েছি গুম, খুন, মামলা বাণিজ্য, সন্ত্রাস ও বাড়তি হামলা থেকে মুক্ত থাকার সুযোগ। পেয়েছি স্বাধীনভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকার।

তিনি সতর্ক করে বলেন, জুলাইকে যদি আইনী ভিত্তি না দেওয়া হয় তাহলে বিপ্লবীদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে এবং ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্ত পুনরায় ফিরে আসার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে ছাত্রজনতার যে প্রত্যাশা ছিল তা ছিল ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক একটি কল্যাণ রাষ্ট্র কাঠামো নির্মাণ করা। জাতি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করা জরুরি, নির্বাচনের আগে নিরাপদ ও শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে জনগণের মতামতের স্বতন্ত্র মূল্যায়ন হবে, ছোট রাজনৈতিক দলগুলো সংসদে প্রবেশের সুযোগ পাবে এবং একটি বহুমাত্রিক, সকলকে অন্তর্ভুক্তকারী সরকার গঠিত হবে।

জেলা আমীর বলেন, পি আর পদ্ধতির বিরোধিতা কেবল তাদের পক্ষেই সম্ভব, যারা অতীতের কর্তৃত্ববাদী, একদলীয় শাসন ফিরিয়ে আনতে চায়। তিনি দাবী করেন, বিগত সরকারের চলমান জুলুম নির্যাতন ও জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান করতে হবে এবং গণতন্ত্র ধ্বংসের সহায়ক বলে যে দলগুলোকে মনে করা হয়, তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদকমুক্ত করে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধ ও নিরাপদ জনপদ গড়ে তুলতে চায় জামায়াতে ইসলামী। যেখানে সব ধরণের মানুষ—বিভিন্ন দল, ধর্ম, বর্ণ ও পেশার মানুষ—একসঙ্গে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করবে। এজন্য তিনি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দিয়ে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ।

এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক, সেক্রেটারি মাওলানা হুমায়ুন কবির, সহকারী সেক্রেটারিদ্বয় হুসনি মোবারক বাবুল ও অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম খান, সাংগঠনিক সেক্রেটারি মো. শহিদুল ইসলাম, শহর আমীর অধ্যাপক মিজানুর রহমান চৌধুরী।

সমাবেশ পরিচালনা করেন সদর উপজেলা আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসাইন বাদল। সমাবেশ শেষে একটা বিক্ষোভ মিছিল শহরের নিরালা মোড় থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়।