দীর্ঘ ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারছে জেলে বাওয়ালীসহ পর্যটকরা। আর সেই পর্যটকদের বরণ করে নিতে সকল প্রস্তÍতি সম্পন্ন করেছে বন বিভাগ। বাড়তি আকর্ষণ হিসাবে কালাবগী ও শেখের টেক ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র দুটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণ করতে নেওয়া হয়েছে সার্বিক নিরাপত্তাসহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা। নিবিঘ্নে যাতে মনের আনন্দে পর্যটকরা ঘুরতে পারে তার জন্য বন বিভাগের উদ্যোগে এত কিছুর আয়োজন।

বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জে অবস্থিত শেখের টেক ও কালাবগী ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র দুটি পর্যটকদের জন্য প্র¯‘ত, যেখানে পন্টুন, ওয়াচ টাওয়ার, গোলঘর ও ফুট ট্রেইলের মতো সুবিধা তৈরি করা হয়েছে। এই কেন্দ্র দুটি সুন্দরবনের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য উপভোগ করার একটি নতুন সুযোগ তৈরি করেছে, যেখানে দর্শনার্থীরা হরিণ ও কুমির দেখতে পারবে এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থান ও জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয় বাঘের বাড়ি খ্যাত শেখের টেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রটিতে রয়েছে প্রাচীন মন্দির। সেখানে গেলে বাঘের দেখাও মিলতে পারে।

অপরদিকে কালাবগী ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রের বৈশিষ্ট হলো যে, এটি সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জের আওতাভুক্ত একটি ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র, যা খুলনা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে নৌযান থেকে ওঠানামার জন্য রয়েছে পন্টুন। পর্যটকদের বসার জন্য গোলঘর ও বেঞ্চ। বনের মধ্যে হাঁটার জন্য কংক্রিটের ফুট ট্রেইল তৈরী করা হয়েছে। পর্যটকদের দেখার জন্য পৃথক খাঁচায় হরিণ ও কুমির রাখা আছে। কালাবগী ঘুরে ঐ স্টেশন থেকে পারমিট নিয়ে শেখের টেক যেতে পারবে পর্যটকরা।

বন বিভাগ জানায়, আগে সুন্দরবনে পর্যটকদের জন্য ৭টি ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র ছিল। এত বেশি মানুষের মাত্র ৭টি স্থানের যাতায়াতের ফলে ঝুঁকির মুখে পড়েছিল সেখানের সার্বিক পরিবেশ। পর্যটকদের ভারে বনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো এবং তাদের ভ্রমণ আরও সুচারু করার জন্য পরিবেশবান্ধব পর্যটন স্পট বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ।

সম্প্রতি নতুন করে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্ধা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক আর পশ্চিম সুন্দরবন বিভাগের খুলনা রেঞ্জে শেখেরটেক ও কালাবগীতে আরও ৪টি পর্যটন স্পট তৈরি করা হয়েছে।

নতুন নির্মাণাধীন কালাবগী ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র সম্প্রতি পরিদর্শন করে দেখা গেছে, পর্যটকদের জন্য সেখানে তৈরি করা হয়েছে নৌযান থেকে ওঠানামার পন্টুন, ওয়াচ টাওয়ার, বসার জন্য গোলঘর। বনের মধ্যে কিছুটা হাঁটাহাঁটির জন্য তৈরি হচ্ছে কংক্রিটের ফুট ট্রেইল।

সেখানে খাঁচায় রাখা হয়েছে হরিণ ও কুমির। তবে কালাবগীতে ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রে অবাধ যাতায়াত করতে দেখা যায় বন্য শুকর, বানর, গুইসাপ ও চিত্রল হরিণের। আবার কোথাও কোথাও বাঘের পায়ের ছাপেরও দেখা মিলছে।

কালবগী স্টেশন কর্মকর্তা মো. হামিদুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে বন বিভাগ সব সময় প্র¯‘ত। তারা যাতে নিবিঘ্নে চলাচল করতে পারে তার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।