মোঃ রফিকুল ইসলাম (কালিগঞ্জ) সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের গ্রাম-গঞ্জ থেকে বাঁশ ও বেত শিল্প বিলুপ্তির পথে। পরিবর্তে রকমারি প্লাস্টিকের পণ্যে দখল করে নিয়েছে বাজার। বর্তমানে বাঁশ ও বেত শিল্পের সাথে জড়িত মানুষেরা হয়ে পড়েছে কর্মহীন। তাই বাব-দাদার পেশা ছাড়ছেন অনেকে। এক সময় বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি পালি, চাঙ্গারী, ধামা, কুলা, ডালা, ঝুড়ীসহ বিভিন্ন শৌখিন দ্রব্য সামগ্রীর দেশজুড়ে বেশ কদর ছিল। কৃষকরা আমন, আউশ, বোরো ধান সহ অন্য অন্য ফসল, বাড়ির কাজে ব্যবহার করত বাঁশ ও বেতের তৈরি দ্রব্য কিন্তু বর্তমানে এই শিল্পটি ধ্বংস হতে চলেছে। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচর্যা, রোপণ ও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বাঁশ উজাড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে বাঁশ-বেতনির্ভর এই শিল্পটি এখন বিলুপ্ত হতে চলেছে।

গ্রামের হাট-বাজারে বাঁশের তৈরি নানা ধরনের কুলা, ডালা, চাঙ্গারী, ধামা, টুকরি, চালুনি, খালই ঠুশি, খুচিসহ মাছ ধরার বিভিন্ন সামগ্রী, মই, খেলনা ও বিভিন্ন শৌখিন শিল্পসামগ্রী বিক্রি হতো। এলাকায় কাঁচা ঘর, ঘরের চাল, বাঁশের খুঁটি, বেড়া, ঘরের দরজা ইত্যাদিতেও বাঁশ ও বেত শিল্পের ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মত। বেত দিয়ে তৈরি হতো ধামা, কাটা, দাঁড়িপাল্লা, শিশুদের বিভিন্ন খেলনাসামগ্রী। আধুনিক প্লাস্টিকের ছোঁয়ায় এ শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন আর গ্রামের বাজারে বাঁশ-বেতের তৈরি শিল্প আগের মতো চোখে পড়ে না। বাজারে চাহিদা কম ও বাঁশঝাড় উজাড় হয়ে যাচ্ছে। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়ছে অনেকে। তাই এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলোর সদস্যরা এখন অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছে। বলা যায় আয়-রোজগারের অভাবে অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপনও করছেন।

গত শনিবার (০৯ নভেম্বর) সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতার হাটে বাঁশের তৈরি শিল্পসামগ্রী কুলা, ডালা, মাথালী বিক্রি করতে আসা সুশীল গাতি গ্রামের দুলাল দাস বলেন, বাপ-দাদার আমলের এই পেশাকে এখনো আঁকড়ে ধরে রেখেছি।