গাজীপুর মহানগরের শিমুলতলী এলাকায় অনুষ্ঠিত বাণিজ্য ও কুটিরশিল্প মেলায় চা পানের দোকান সহ অন্যান্য পণ্যের অতিরিক্ত মূল্যকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে আর্মি ফার্মা মাঠে অনুষ্ঠিত মেলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

সদর মেট্রো থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, ডুয়েটের কয়েকজন ছাত্র শনিবার রাতে মেলার দোকানে চা খেতে গেলে দেখা যায় দোকানদার পাঁচ টাকার চা দশ টাকায় ও বিশ টাকায় বিক্রি করছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে দোকানদার ও মেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছাত্রদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মেলার অভ্যন্তরে ডুয়েটের এক ছাত্রকে মারধর করা হয়। এরপর ক্ষুব্ধ ছাত্ররা মেলায় প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, মেলার স্টলগুলোতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম আদায়ের কারণে ক্রেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা মেলায় ঢুকে দোকানপাট, লটারির প্যান্ডেল, টিকিট কাউন্টার ও মেলা অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে। হামলার সময় মেলার ভেতরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং দর্শনার্থীরা হুড়োহুড়ি করে বের হতে শুরু করেন। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।

স্থানীয়রা আরও জানান, হামলার সময় মেলার অনেক কর্মী পালিয়ে যায়। পরে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতির শান্ত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জিএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ জাহিদুল হাসানের জানান, ঘটনার পর আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে ওই মেলা পরিচালনা করার জন্য মেলা কর্তৃপক্ষ আমাদের নিকট থেকে কোন অনুমোদন নেইনি।

উল্লেখ্য, প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া প্রায় দুই মাস ধরে মেলাটি পরিচালিত হচ্ছে। শুরু থেকেই এলাকাবাসী এই মেলার বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। তাদের অভিযোগ—এটি ‘কুটিরশিল্প মেলাথ নামের আড়ালে লটারি, জুয়া ও বিভিন্ন অনিয়মের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

এর আগে একই মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করলেও কর্তৃপক্ষ মেলা বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অনুমতি ছাড়া পরিচালিত মেলার বিরুদ্ধে জনদুর্ভোগের অভিযোগ উপেক্ষা করেই আয়োজকেরা মেলা চালিয়ে আসছিল। শনিবারের হামলা সেই দীর্ঘদিনের ক্ষোভেরই বিস্ফোরণ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।