বাউফল (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা : পটুয়াখালীর বাউফলে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তিতে গণমিছিলে যোগ দেয়ায় জামায়াতের কর্মী ফারুক হাওলাদারকে মারধর করেছে বলে বিএনপি নেতা জসিম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরে আহত ফারুক হাওলাদার বাউফল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের আয়নাবাজ কালাইয়ায় এ ঘটনা ঘটে
হাসপাতালে চিকিৎসারত আহত ফারুক হাওলাদার (৬০) বলেন, প্রথমত, ঢাকায় জামায়াতের ঐতিহাসিক সমাবেশে আমি যোগদান করার পর থেকে ওই বিএনপি নেতার টার্গেটে পরি। দ্বিতীয়ত, ৫ আগস্টে বাউফলে জামায়াতের আনন্দ মিছিলে যোগদান করায় আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে গত বুধবার সকালে বিএনপি নেতা জসিম পঞ্চায়েত ও তার লোকজন আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। একইসাথে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জামায়াত কর্মী ফারুক বলেন, আমাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে কুকুরের মতো মেরেছে ওরা। আমি অসুস্থ আমাকে মারিস না বলার পরেও তারা থামেনি। আমাকে পুরো শরীরে আঘাত করা হয়েছে। আমার অন্ডকোষে লাথি দেয়ায় আমি মারাত্মক যন্ত্রণা সহ্য করতেছি। আমাকে ওরা হুমকি দিয়েছে যে- তুই জামায়াত করিস তুই আজকে দিনের মধ্যে কালাইয়া ছাড়বি। তা নাহলে তোকে মেরে ফেলব।
মারধরে আহত ফারুকের স্ত্রী বিউটি বেগম (৫৫) বলেন, আমার স্বামী নানা রোগে আক্রান্ত। আমার স্বামীকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে বিএনপি নেতা জসিম পঞ্চায়েত বলেন, আজকে দিনের মধ্যে দেশ ছাড়বি। কালাইয়ায় কোনো জামায়াতের রাজনীতি চলবে না। তোরা যদি দেশ না ছাড়িস তাহলে তোদের খবর আছে। আমরা এই ঘটনায় প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি এখন।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক কালাইয়া ইউনিয়নের ৪ নাম্বার ওয়ার্ড জামায়াতের সহ-সভাপতি তাসনিম আলম বলেন, দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা বিভিন্ন দাওয়াতি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করি। তারা সেখানে প্রতিনিয়ত বাধা দিচ্ছে। আমাদের সাংগঠনিক কাজ করতে দিচ্ছে না বিএনপির কথিত ওই নেতারা। আয়নাবাজ কালাইয়া কোনো জামায়াত থাকতে পারবে না। তারা হুমকি দিচ্ছে- যেসব নারীরা জামায়াত করবে তাদেরকে গণধর্ষণ করা হবে। আমরা জীবনের ঝুঁকিতে আছি।
অভিযোগ অস্বীকার করে এ বিষয়ে সাবেক কালাইয়া ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি পঞ্চায়েত বলেন, ফারুক হাওলাদার আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মী ছিল। তাকে আমি বলেছি এখন বিএনপি করো। তুমি জামায়াত করবা কেন? কিন্তু তিনি কথায় রাজি হয়নি। তিনি জামায়াতের রাজনীতিই করছিল। এটি নিয়ে তার সাথে উচ্চবাচ্য হয়েছিল। তবে তাকে আমি মারিনি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান সরকার, ঘটনা শুনেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।