খুলনা-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৪ জনকে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলেও এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে খুলনা জেলা বিএনপি। গুরুতর আহতরা হলেন-পারভেজ মল্লিক গ্রুপের শাহজালাল শেখ শান্ত, শাহজাদা আলমগীর, আকরাম হোসেন, মেহেদী হাসান বুলু ও ইমরান হোসেন এবং আজিজুল বারী হেলাল গ্রুপের জাহিদ শেখ।

দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী সাবেক ছাত্রদল নেতা শাহজালাল শেখ শান্ত জানান, খুলনা-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পারভেজ মল্লিকের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রূপসা সদরে তিনটি কর্মসূচি ছিল। তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ, স্থানীয় সকল মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের মধ্যে পাঞ্জাবী বিতরণ, এসএসসি উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কাজদিয়া কলেজ রোডে কর্মসূচি স্থলে হাজির হলে তরিকুল ইসলাম রিপন, আসাবুর, আজিজুল মেম্বার, বনি আমিন সোহাগ, জাকিরের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন শ্লোগান দিতে দিতে আমাদের ঘিরে ফেলে এবং লাঠিসোটা, লোহার রড, রামদাসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। তাদের এলোপাতাড়ি আঘাতে ও কোপে আমরা বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হই। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে পারভেজ মল্লিক ভাই সেখানে পৌঁছালে দ্বিতীয় দফা তাকে ঘিরে ফেলে হামলা চালায় শতাধিক সন্ত্রাসী দুর্বৃত্ত। হামলাকারীরা বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও এই আসনের মনোনয়ন দাবিদার আজিজুল বারী হেলালের কর্মী বলে অভিযোগ করেন তিনি।

টিএসবি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি খান আনোয়ার হোসেন বলেন, পারভেজ মল্লিক মূলধারার নেতা কর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ দোসরদের নিয়ে বিএনপির ভিতরে বিভাজনের সৃষ্টি করছে। যার ফলে দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীরা মিলে তাদেরকে প্রতিহত করেছে।

রূপসা থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত কয়েক জনকে হাসপাতালে আনা হয়। ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আহত ৪ জন ভর্তি রয়েছে। আহতরা সবাই শঙ্কামুক্ত।

পারভেজ মল্লিক বলেন, দলীয় কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে গিয়ে আমার কর্মীরা হামলার শিকার হয়েছে। এটি দু:খজনক। এর আগেও তেরখাদা ও দিঘলিয়ায় আমার কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমার কর্মসূচি বাঁধাগ্রস্ত করা হয়েছে। বারবার এ ধরনের ঘটনায় সাধারণ মানুষের সামনে দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে।

বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। তার হোয়াটঅ্যাপে যোগাযোগের চেস্টা করলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু জানান, খবর শুনেই তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নেন এবং স্থানীয় দায়িত্বশীলদের পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কারো অতি উৎসাহে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে কিনা তা তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়া হবে। খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. আনিসুজ্জামান রূপসা থানার ওসি মাহফুজুর রহমানের বরাত দিয়ে বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই মারামারি হয়েছে, এখন পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।