খুলনায় অসময়ের তরমুজের ফলনে লাভবান হচ্ছে কৃষক। তবে দাম বেশি থাকায় হাক-ডাক করে বিক্রি করলেও মিলছেনা ক্রেতাদের সাড়া। খুলনা নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্মান ভ্যানে দেখা যায় ছোট ছোট সাইজের তরমুজ। একটি সর্বেচ্চ দুই থেকে তিন কেজি ওজন হবে। প্রতি কেজি তরমুজের দাম চাওয়া হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। খুলনা জেলার দাকোপ, বটিয়াঘাটা অঞ্চলের তরমুজ এখন বিক্রি ভ্যানে করে হাক-ডাক ছেড়ে বিক্রি করলেও নেই ক্রেতাদের আগ্রহ। এমনটি জানিয়েছে খুচরা বিক্রেতারা। এদিকে রমযান মাসে অতিরিক্ত দাম দিয়ে ক্রেতারা তরমুজ ক্রয় করেছেন যার প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়। তবে, এসব তরমুজ গুলো ভিতরে লাল আর সুস্বাদু অফ সিজনে মাঠ পর্যায়ে কৃষকরা ভালো লাভবনা হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে মাত্র ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে ফল তোলা যায়। আর এসব ফল বিক্রি করা যাচ্ছে এক লাখ বিশ হাজার টাকা থেকে একলাখ ত্রিশ হাজার টাকা পর্যন্ত বলে জানিয়েছেন খুলনা কৃষি বিভাগ। এছাড়া প্রতিটি ফলের ওজন তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি পর্যন্ত ওজন হতে পারে। যদি কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী তরমুজের আবাদ করা হয়।

পাইকগাছা এলাকা তরমুজ চাষি মো. আলী আব্বাস বলেন, প্রথমে আমি অফ সিজনে তরমুজ চাষ নিয়ে একটু ভয় পাচ্ছিলাম। তবে আমি দেখলাম আমি একা না আরও অনেকে আছেন যারা ঝুঁকি নিয়ে অফ সিজনে তরমুজ চাষ করছে। এছাড়া স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা স্যারের নির্দশনা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে শুরু করলাম। আমার সব মিলিয়ে দেড় বিঘা জমিতে খরচ হয়েছে ৪২ হাজার টাকার মত। এখন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ বিশ হাজার টাকা মত বিক্রি করেছি আরও ফল আছে জমিতে।

খুলনা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর খুলনা উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা খুলনা বিভিন্ন উপজেলায় ২২টি স্কুলে মোট ৮২০ জন কৃষককে মোট ৭ সপ্তাহ প্রশিক্ষণ দিয়েছি। অফসিজনে তরমুজ চাষে কৃষকের লাভবান হচ্ছে। বর্তমান খুলনা জেলায় ২০২৫-২৬ অথর্ বছরে অফসিজনে তরমুজ আবাদ (উপজেলা ওয়ারী বিভাজন) রূপসা-৯ হেক্টর, বটিয়াঘাটা-৬৫০ হেক্টর, দিঘলিয়া-২ হেক্টর, ফুলতলা-২হেক্টর, ডুমুরিয়া-১৮১হেক্টর, তেরখাদা-৩৪ হেক্টর, দাকোপ-১৬ হেক্টর, পাইকগাছা-৪২ হেক্টর, কয়রা-৩০ হেক্টর, খুলনা জেলা-৯৬৬ হেক্টর। বিসিআরএল প্রকল্পের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খরিপ-১ মওসুমে খুলনা জেলায় ৩ টি উপজেলায় (বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া ও পাইকগাছা) অফসিজনাল তরমুজের উপর ১৬টি কৃষকমাঠ স্কুল (এফএফএস) পরিচালিত হয়েছে। উক্ত স্কুলগুলোতে কৃষক প্রতি ৫০ গ্রাম বীজ, ৯ টি করে ফেরোমন ট্রাপ, খাতা, কলম, ফোল্ডার ইত্যাদি উপকরণসহ ৭ টি সেশনের মাধ্যমে তরমুজের বিভিন্ন বিষয়ের উপর (বীজ থেকে তরমুজ) শিখতে পেরেছে এছাড়াও উক্ত প্রকল্পের আওতায় ৩ টি উপজেলায় নতুন করে ৬টি (প্রতি উপজেলায় ২ টি করে) কৃষক মাঠ স্কুলের বরাদ্দ পাওয়া গেছে যেগুলো কিছুদিনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।