পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার পদত্যাগ দাবি জানিয়েছে ‘সিএইচটি সম্প্রীতি জোট’। তাদের অভিযোগ— শেখ হাসিনার চেয়েও ভয়ঙ্কর ফ্যাসিবাদী চরিত্রের অধিকারী সন্তু লারমা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পতাকা ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব দাবি উত্থাপন করা হয়। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সমন্বয়ক থোয়াইচিং মং শাক।

তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চল অশান্ত। কখনো বাঙালি-অবাঙালির মধ্যে সংঘর্ষ, কখনো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের আধিপত্য বিস্তারের লড়াই, আবার কখনো সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটছে। থোয়াইচিং মং শাক অভিযোগ করেন, ভারতের সহযোগিতায় চাকমা নেতৃত্বাধীন ইউপিডিএফ ও জেএসএস পার্বত্য চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে। এ সংগঠনগুলো সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণে উৎসাহিত করছে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে ব্যবসায়ী, ঠিকাদার ও কৃষকদের জিম্মি করছে এসব সংগঠন। ওই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অস্ত্র আনা হয়। অনেক নেতা ভারতে পালিয়ে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে এবং সেখান থেকেই কথিত ‘জুম্মল্যান্ড’ প্রতিষ্ঠার নীলনকশা আঁকছে। তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, নির্যাতন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস চলছে। ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এর লক্ষ্য বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করা এবং রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করা। শান্তিচুক্তিকে অশান্তির চুক্তি আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ২৮ বছরে চুক্তির সুফল মানুষ পায়নি। বরং সন্তু লারমা খুন, গুম, চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র কর্মকাণ্ড চালিয়ে পাহাড়কে অস্থির করেছেন। তিনি বিপুল অর্থে অস্ত্র কিনেছেন, ভারতে সম্পদ গড়েছেন এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন।

এ সময় এনজিওগুলোর কার্যক্রমকেও পাহাড় অস্থিরতার জন্য দায়ী করেন থোয়াইচিং মং শাক। তার মতে, বিদেশি ফান্ড বন্ধ হলে ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহারও বন্ধ হয়ে যাবে। পশ্চিমা এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কিছু মহল বিভাজনমূলক পরিচয় চাপিয়ে দিচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন থেকে পার্বত্য অঞ্চলে স্থায়ী সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি, বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত সংগঠনগুলোর কার্যক্রম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ, বিভাজন সৃষ্টিকারী শব্দ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়ে ঐক্য প্রতিষ্ঠাসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানানো হয়। এতে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের মুখ্য সমন্বয়ক পাইশিখই মারমা, সমন্বয়ক রাকিব হোসাইন নওশাদ, আইনজীবী পারভেজ তালুকদার, ইখতিয়ার ইমন ও তন্ময় হোসেন নাসির উপস্থিত ছিলেন।