বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল জননেতা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় সাতকানিয়া লোহাগাড়া আসনে বিপুল ভোটে আমাদের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। এ আসনকে একটি মডেল আসন হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। দেশে আজ বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে নির্বাচনকে উপস্থাপন করতে চাই। জামায়াতে ইসলামী পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাবনা দিয়ে আসছে। কারণ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে পুনরায় ফ্যাসিবাদ কায়েম হবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে প্রাণবন্ত সংসদ গঠনের নিমিত্তে ইতিহাস সৃষ্টি করার আহ্বান জানাচ্ছি।
গত রোববার রাতে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে চট্টগ্রাম শহরে অবস্থানরত চট্টগ্রাম-১৫ আসনের ছাত্রশিবিরের সদস্যদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, সাতকানিয়া লোহাগাড়ার জনগণ ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ। ইসলামের জন্য যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চল বিখ্যাত। ফ্যাসিস্ট সরকার এ জনপদে যেভাবে জুলুম নির্যাতন করেছে তা ইতিহাসে নজিরবিহীন। জুলাই বিপ্লব আল্লাহর দেয়া বিশেষ নিয়ামত। এ বিপ্লবের পর এতদঞ্চলে ইসলামের কাজ পুনরায় উজ্জীবিত হয়েছে। আগামীর নির্বাচনে ইসলামের শক্তি বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবে, ইনশাআল্লাহ। তাই সময়কে কাজে লাগিয়ে অনলাইন ক্যাম্পিং ও হাউজ ক্যাম্পিং অব্যাহত রেখে সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় দাঁড়িপাল্লার গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনের জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, জুলাই বিপ্লবের সময় চট্টগ্রামে ছাত্রশিবির যেভাবে নিরলস ভূমিকা রেখে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে, ঠিক তেমনিভাবে আগামী নির্বাচনে ভূমিকা রাখলেও দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত হবে, ইনশাআল্লাহ। আমার পক্ষ থেকে জনগণের স্বার্থে যেভাবে ভূমিকা রাখা দরকার, আপনাদের মাধ্যমে সেভাবে জনগণের কাছে যাওয়ার সহযোগিতা কামনা করছি। জুলাই বিপ্লবকে বুকে ধারণ করে বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে সকলের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক জাফর সাদেক বলেন, নগরীর ভোটার থেকে শুরু করে গ্রামের ভোটার প্রত্যেকের কাছে দাঁড়িপাল্লার খবর পৌঁছাতে হবে। আগামী নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে একটি ইনসাফ ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠন করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চবি শিবিরের সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন রনি বলেন, আমাদের নিজেদের মান অনুযায়ী ময়দানে কাজ করলে আমাদের বিজয় হবে, ইনশাআল্লাহ। তবে দায়িত্বশীলদেরকে আরও সতর্ক থেকে জনগণের স্বার্থে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নগর উত্তর শিবিরের সভাপতি তানজির হোসেন জুয়েল বলেন, আগামী নির্বাচনের দুটি পক্ষ দৃশ্যমান হচ্ছে। তন্মধ্যে একটি ইসলামী শক্তি, যারা জনগণের কল্যাণে নিবেদিত থাকে। অন্যটি ইসলাম বিরোধী শক্তি, যারা সর্বদা জনগণের উপর জুলুম ও শোষণ করে থাকে। যেভাবে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ইসলামের উপর নির্যাতন করেছে। তাই জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে আগামী নির্বাচনে বিজয়ের লক্ষ্যে ময়দানে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, একজন মেধাবী ও সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশের জন্য আমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে। শহীদ ও পঙ্গুত্ববরণকারী অসংখ্য ভাইদের ত্যাগের এ ময়দানে জামায়াতের প্রার্থী বারবার নির্বাচিত হয়েছিল। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার দীর্ঘদিন যাবত ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। জনগণকে নির্যাতন করে হাজার হাজার পরিবারকে দেউলিয়া করেছে। তাই দেশ ও জাতির কল্যাণে অতীতের বিজয়ের ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনতে সকলকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম-১৫ সংসদীয় আসনের পরিচালক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আসন কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা নায়েব আমীর ড. হেলাল উদ্দিন মুহাম্মদ নোমান এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হক, জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ জাকারিয়া, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি মাওলানা নুরুল হোসাইন, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা কামাল উদ্দীন, নুরুল হক, আরিফুর রশীদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শিবিরের সভাপতি আসিফুল্লাহ মুহাম্মদ আরমান, চট্টগ্রাম পশ্চিম জেলার সভাপতি মুহাম্মদ আবদুর রহিম, সাবেক ছাত্রনেতা গিয়াস আজাদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শিবিরের সেক্রেটারি ডি.এম আসহাব উদ্দীন প্রমুখ।