আফাজ্জল হোসেন, বাগমারা সংবাদদাতা : রাজশাহীর-৪ (বাগমারা) আসনে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। নির্বাচনে প্রার্থীরা আগাম প্রচার প্রচারণায় মাঠে নেমে পড়েছেন। যে যার মত প্রচার-প্রচারণায় পোষ্টার মেরে গ্রাম-গঞ্জে সমাবেশ ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ নিয়ে মোড়ে মোড়ে চা ষ্টলে বসে চলছে নির্বাচনী খোশগল্প। এ আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থী থাকলেও মূলত মাঠে প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াত মাঠ গরম করে রেখেছে। বাগমারা আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা নায়েবে আমীর বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: আব্দুল বারী ও বিএনপি’র প্রার্থী বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডি.এম জিয়াউর রহমান।
জানা যায়, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌর এলাকা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৪ আসন। আয়তন- ৩৬৩.৩০ বর্গ কিলোমিটার ভোটার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৫৪ হাজার ৬ শত ৬৪। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বর্তমানে উপজেলার সর্বত্র আলোচনা সমালোচনায় গ্রাম-গঞ্জ ও পাড়া-মহল্লা এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। এতে উপজেলায় তৃণমূল রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। মনোনয়ন লড়াইয়ে উপজেলায় বিভক্তি হয়ে থাকলেও কি অবস্থায় পড়ছে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ তা নিয়ে ভাববার বিষয়। মনোনয়ন লড়াইয়ে বিএনপির তৃণমূল বিভক্ত হয়ে পড়েছে। অপর দিকে জামায়াতের একক প্রার্থী উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ভবানীগঞ্জ ক্লিনিকের পরিচালক বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: আব্দুল বারী। জামায়াতের প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন সিদ্ধান্তের পর সক্রিয়ভাবে মাঠে রয়েছেন। ফলে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে উপজেলায় প্রধান দুটি দল বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে লড়াই হবে বলে অভিজ্ঞমহল মনে করছেন।
ডি.এম জিয়াউর রহমান বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আউসপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে পাশে থেকেছি। আমি দীর্ঘ সময় জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছি। এসব বিষয় বিবেচনায় হাইকমান্ড তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। বিজয়ে তিনি আশাবাদী। বাগমারা বিএনপি’র দুর্দিনে আমি নেতাকর্মীদের আগলে রেখেছি। এক সময়ে বাগমারায় বিএনপির রাজনীতিতে কিছুটা নেতৃত্বের সংকট দেখা দেয়। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে কাজ করি বা করছি। দীর্ঘ ১৫ বছর ফ্যাসিবাদ আওয়ামীলীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম। দুর্নীর্তিমুক্ত বাগমারাকে গঠন করবো ইনশাল্লাহ, এটাই উদ্দেশ্য। বাগমারাবাসীর সেবা করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। জনগণের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থেকে বাগমারাবাসীর সেবা করার লক্ষ্য। দলীয় নেতাদের মধ্যে দিধা-দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি বলেন, দল বিভিন্ন পর্যায়ে যাছাই করে তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে। গত ৩ নভেম্বর দলীয়ভাবে প্রাথমিক প্রার্থীর তালিকায় এই আসনে তার নাম ঘোষণা করা হয়। এছাড়া গত ১৫ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক সভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁকেসহ চাঁপাই নবাবগঞ্জের প্রার্থীদের হাতে ধানের শীষ তুলে দিয়ে চূড়ান্ত মনোনয়নের বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে এ আসনে বিএনপি’র শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে উঠেছে, জামায়াতের একমাত্র নেতা উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ভবানীগঞ্জ ক্লিনিকের পরিচালক বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: আব্দুল বারী। ডা: আব্দুল বারী চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। এই আসনটি জামায়াতের দখলে রইবে এমন প্রত্যাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট দলের নেতৃবৃন্দ। ডা: বারী পরিচ্ছন্ন ও উন্নত বাগমারা গড়ার জন্য জমায়াতে ইসলামীর প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ সকল অনিয়ম দুর করতে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করতে সমাবেশে ও পথসভায় বক্তব্য রাখছেন। ডা: আব্দুল বারী বলেন, মানুষের সেবাই আমাদের লক্ষ্য। মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং সুলভ চিকিৎসা সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ায় আমাদের প্রধান সেবা থাকবে। বাগমারর প্রত্যন্ত এলাকায় আমরা এ সেবা দিতে চাই। বহু কাল থেকে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায় ও দীনহীনদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছি। এ সেবা আরো বাড়াতে সবাই আমাকে সহযোগীতা করবেন। সকলের সহযোগীতায় সমাজে বিশৃংখলা এবং সকল বৈষম্য ও হানাহানির অবসানে আমরা সোচ্চার। ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গড়ার অঙ্গীকার প্রত্যয়ে আমি অনড়।