আমরা ফেরেশতা নই যে জাদু দিয়ে সব কিছু করে দিতে পারবো-অন্তর্বর্তী সরকারের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে এমন স্পষ্ট উচ্চারণ করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার আল্লাহ থেকে নাজিল হয়ে আসেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ঠিক করা হবে, আমরা চেষ্টা করছি সংস্কারের মাধ্যমে একটি টেকসই কাঠামো গড়ে তুলতে।
মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীর নতুন বাজার এলাকায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের মৈত্রী শিল্প কারখানা পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা শারমীন বলেন, “সব জায়গায় দুর্নীতি, যেন পোকামাকড়ের মতো ছড়িয়ে আছে। যেখানে হাত দিচ্ছি, সেখানেই ঝাড়ু দিতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা শত যুগের আবর্জনার মধ্যে পড়ে আছি। যুগ যুগ ধরে এই অব্যবস্থাপনা চলেছে। এখন একসঙ্গে সব ঠিক করা সম্ভব নয়। সময় ও কাজের পরিধি অনুযায়ী ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসবে। যেখানেই আমরা হাত দিচ্ছি, সেখানেই সংস্কার হচ্ছে।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘মুক্তা পানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মুক্তাথর মতো একটি ইন্ডাস্ট্রি স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া উচিত ছিল। ছোট ছোট অনেক বেসরকারি প্রকল্প আছে যেগুলো স্বয়ংসম্পূর্ণ, আর সেখানে ভর্তুকি দিতে হয় না। আমি যদি সময় পাই, তবে মুক্তা পানির বছরে সরকারের দেওয়া ২২ কোটি টাকার ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, মুক্তা এখন সংস্কারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানেন—এখন থেকে শৃঙ্খলা ও গবেষণার মাধ্যমে এগোতে হবে। সারাবিশ্বেই প্লাস্টিক বোতলের বিকল্প এখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি, কিন্তু মুক্তায় আমি চাই একটি প্লাস্টিক গবেষণা সেল গড়ে উঠুক।
একই দিনে মৈত্রী শিল্পের প্রধান ফটকের সামনে চাকুরিচ্যুত প্রতিবন্ধী কর্মীরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেন। তবে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ পরিদর্শন শেষে ওই পথ দিয়ে ফেরার সময় মানববন্ধনস্থল এড়িয়ে যান বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
পরিদর্শনকালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ট্রাস্টের শিল্প নির্বাহী পরিচালক কাজী মাহবুবুর রহমান, কারখানা ব্যবস্থাপক মহসিন আলীসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট মৈত্রী শিল্পথ বর্তমানে প্লাস্টিক ও অন্যান্য উপকরণসহ ১২৮ ধরনের পণ্য উৎপাদন করছে, যেখানে কর্মরত ১২৫ জনের মধ্যে ৯৭ শতাংশই শারীরিক প্রতিবন্ধী।