দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পরিবারের মালিকানাধীন শিল্পগোষ্ঠী আরামিট পিএলসি’র দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচারের অভিযোগে করা মামলায় তাদের এই রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিল এই আদেশ দেন। রিমান্ডে যাওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন:
মো. আব্দুল আজিজ: আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়ামের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম)। তিনি জাবেদের সম্পদ কেনা-বেচা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।
উৎপল পাল: আরামিট পিএলসি’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম)। তিনি সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে বিদেশে সম্পদ অর্জন ও দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন।
বুধবার রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকা থেকে দুদক এই দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।
দুদকের তদন্তে জানা যায়, ২০১৯-২০ সালে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ যখন ভূমিমন্ত্রী ছিলেন, তখন এই জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। জাবেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা আরামিটের কর্মকর্তাদের নামে পাঁচটি অস্তিত্বহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেন। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে গম, ছোলা, হলুদ ও মটর আমদানির জন্য ১৮০ দিনের মধ্যে ফেরতযোগ্য ‘টাইম লোন’-এর আবেদন করা হয়।
তাদের নিজস্ব মালিকানাধীন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পর সেই টাকা অন্য চারটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেই টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। দুদক বলছে, উৎপল পাল এই অর্থ পাচার প্রক্রিয়ার মূল পরিকল্পনাকারী। তার ল্যাপটপ ও মোবাইল থেকে অর্থ পাচারের তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।
গ্রেপ্তার আব্দুল আজিজের নামে ‘ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং’ নামে একটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছিল। ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে আত্মসাৎ করা টাকার কিছু অংশ তার প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই দুদক জাবেদ, তার স্ত্রী, ভাই-বোন, এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ৩১ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি করে।