মাহফুজ আলম, কাপ্তাই : রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের পাহাড়জুড়ে চলছে জুম চাষের ফসল ঘরে তোলার মহোৎসব। উৎসবমুখর পরিবেশে কৃষক কৃষাণীরা ব্যস্ততম সময় পার করছে, পাহাড়ে উৎপাদিত সোনালি পাকা ধান, মারফা, ভুট্টা, তিল, সরিষা, আদাসহ নানাসাদী ফসল দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল উৎপাদিত সকল পণ্য দেশের অন্যত্র বিক্রির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া কালে পরিবেশ অনুকূলে থাকায় জুমিয়াদের মুখে হাসি, গ্রামের ঘরে ঘরে উৎসবের আমেজ।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কাপ্তাইয়ের রাইখালী, ওয়াগ্গা, ব্যাঙছড়ি, চিৎমরম, কারিগর পাড়া, হরিনছড়া সহ কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে জুম চাষে ফলন হয়েছে আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে।
জুম চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পাহাড় পরিষ্কার করে জুম চাষের প্রস্তুতি শুরু হয়। এরপর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে জুমিয়ারা গর্ত তৈরি করে ধানসহ কুমড়া, মারফা, তিল, সরিষা তুলা, আদা, ভুট্টাসহ নানান সাথী ফসল রোপণ করেন। রোপণের তিন মাস পর ভাদ্র থেকে শুরু হয় ফসল তোলার ব্যস্ততা, যা চলে অগ্রহায়ণ পর্যন্ত।
জুমচাষি আদু মং মারমা, চিরঞ্জীব তনচংগ্যা ও আব্দুল খালেক জানান, ‘গত বছরের তুলনায় এবারের আবহাওয়া অনেক ভালো ছিল। তাই ফলনও বেশ ভালো। যদি কৃষি বিভাগ থেকে উন্নত মানের বীজ পাওয়া যেত, ফলন আরও দ্বিগুণ হতো।’
কাপ্তাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে জুম ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হেক্টরের বেশি জমির ফসল ইতোমধ্যে কর্তন শেষের পথে রয়েছে। অর্থাৎ, পুরো আবাদি জমির প্রায় ৮০ শতাংশই এখন ঘরে তোলার শেষ পর্যায়ে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাত এবং অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর জুমের ধানসহ অন্যান্য সাথী ফসলের উৎপাদন আশাব্যঞ্জক। তারা আরও বলেন, ‘জুম চাষ আধুনিক পদ্ধতিতে করা হলে এবং উন্নত জাতের বীজ সরবরাহ করা গেলে আরও বেশি উৎপাদন সম্ভব। একই জমিতে ধারাবাহিক চাষের মাধ্যমে জুমিয়াদের আর্থিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব।