ইবি রিপোর্টার : আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘মহানবী (সা.) আমাদের সামনে যে জীবন দর্শন, আদর্শ ও নীতি রেখে গেছেন, সেগুলো আজকের অস্থির ও ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ বিশ্বের জন্য সর্বাধিক বাস্তব ও প্রাসঙ্গিক সমাধান। তিনি ছিলেন সহিষ্ণুতার নিদর্শন। তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কীভাবে ভিন্নমত ও ভিন্ন আদর্শের মানুষকে সহ্য করতে হয় এবং তাদের সঙ্গে মিলেমিশে সমাজ গঠন করতে হয়। এ উদ্দেশ্যে তিনি যে মদিনা সনদ প্রণয়ন করেছিলেন, সেটি আজও পৃথিবীর ইতিহাসে একটি রোল মডেলÑ যেখানে ভিন্ন ধর্মের মানুষ একত্রে নিয়ে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের দিকে তাকাই। সেখানে যে রকম গণহত্যা চালানো হচ্ছে, শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে এবং সেসব দেশ যারা মানবাধিকার শিক্ষা দেয়। তারাই এই বর্বরতা সমর্থন করছে এটি গভীর চিন্তার বিষয়। রাসুল (সা.) নিজের সন্তানের জন্য পোশাক কিনলে তার কর্মচারীর সন্তানের জন্যও একই পোশাক নিশ্চিত করতেন। তিনি সমাজে বৈষম্য দূর করতে ছোট থেকে বড় সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। আমাদেরও তাকে অনুসরণ করতে হবে।
গতকাল বুধবার সিরাতুন নবী (সা.) উদযাপন উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুন্নাতে রাসুল্লাহ (সা.)’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে তিনি এসব একথা বলেন। অনুষ্ঠানে সিরাতুন নবী (সা.) উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও থিওলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ.ব.ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। সঞ্চালনায় ছিলেন অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।
ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সারা বিশ্বের মানব জাতির মুক্তির পথপ্রদর্শক। তিনি কেবল ধর্মীয় নেতাই ছিলেন না, বরং মানবিক মূল্যবোধ, ন্যায়বিচার ও সহমর্মিতার চেতনাকে সমাজে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, ‘মহানবী (সা.) এর জীবনভিত্তিক আলোচনাকে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। আমাদের লক্ষ্য হতে হবে মানুষকে মহানবীর দর্শনের আলোকে গড়ে তোলা। কারণ তার জীবন ও শিক্ষা আজও আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা, যা অনুসরণ করলে আমরা সমাজে সমতা, শান্তি ও মানবাধিকারের বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’
অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্বতন্ত্র গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে মহানবী (সা.) এর জীবন, আদর্শ ও কর্ম নিয়ে বিশেষভাবে গবেষণা করা হবে। সেই গবেষণার ফলাফলকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হবে, যাতে মহানবীর শিক্ষা ও নীতিমালা আরও বিস্তৃতভাবে পৌঁছে যায়। তিনি জোর দেন পৃথিবীর আনাচ-কানাচ খুঁজে বেড়ানোর প্রয়োজন নেই। আমাদের মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।