মদন (নেত্রকোণা) সংবাদদাতা : নেত্রকোণার মদনে চেয়ারম্যান-মেম্বারের ভূয়া ওয়ারিশান সনদে মা ও মেয়েকে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুহেল চৌধুরী এমন ভূয়া ওয়ারিশান সনদ দিয়েছেন। এতে কোকিলা আক্তার নামের এক নারী তার মেয়ে মরিয়ম আক্তারসহ স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। শুধু কোকিলা আক্তার ও মরিয়ম আক্তার নন। তার ভূয়া ওয়ারিশান সনদে একাধিক পরিবার তাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের জহুর উদ্দিন মৃত্যুকালে দুই স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে যান।
এ দিকে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হন জহুর উদ্দিনের নাতী সুহেল চৌধুরী। সুহেল চৌধুরী ক্ষমতার অপব্যবহার করে কৌশলে জহুর উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী কোকিলা আক্তার ও মেয়ে মরিয়ম আক্তারকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে ২০২২ সালের ৯ আগস্ট তি/মদন/নেত্র/২০২২/২৫৭ নং স্বারকে তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ভূয়া ওয়ারিশান সনদ দেন। সুহেল চৌধুরী ওয়ারিশান সনদে উল্লেখ করে জহুর উদ্দিন মৃত্যুকালে এক স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। পরে ওই ভূয়া ওয়ারিশান সনদ দিয়ে লাখ লাখ টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে দেন।
ওই ইউনিয়নের ৪/৫/৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য প্রীতি আক্তার ২০২৪ সালের ০৩ অক্টোবর তি/মদন/নেত্র ২০২৪/১৩০১ নম্বর স্মারকে মরিয়ম আক্তারকে একটি সঠিক ওয়ারিশান সনদ দিলে ভূয়া ওয়ারিশান সনদের বিষয়টি সামনে আসে।
ভুক্তভোগী মরিয়ম আক্তার বলেন, ‘ চেয়ারম্যান এবং মেম্বার যুক্তি করে আমাকে ও আমার মাকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য ভূয়া ওয়ারিশান সনদ দিয়েছে। ভূয়া ওয়ারিশান দিয়ে বাবার সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে। ভূয়া ওয়ারিশানের কারণে আমি যে জহুর উদ্দিনের মেয়ে তা প্রমাণ করার জন্য মানুষের দারে দারে ঘুরছি। আবার তারা ভূয়া ওয়ারিশান দিয়ে জমি বিক্রি করতে চাইছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।
ধুবাওয়ালা গ্রামের আরেক ভুক্তভোগী আফসানা মুনমুন ও রোপিয়া খানম জানান, মুজিবুর চেয়ারম্যানের দেওয়া ভুয়া ওয়ারিশান সনদের কারণে আমরা আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।’
জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সোহেল চৌধুরী বলেন,’ আমার দেওয়া ওয়ারিশান ভুল ছিল। তাই এটা সংশোধন করার জন্য মিটিং করেছি।’
তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান,’ সোহেল চেম্বারের উপর বিশ্বাস করে আমি ওয়ারিশান সনদে স্বাক্ষর দিয়েছিলাম। সত্যিটা জানার পর ওয়ারিশান সনদ বাতিল করার জন্য মিটিং করেছি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অলিদুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’