DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

গ্রাম-গঞ্জ-শহর

তিস্তা মহা পরিকল্পনা প্রকল্প ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো প্রভাব ফেলবে না - চীনা কান্ট্রি ম্যানেজার হান কুন

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্প কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করে পাওয়ার চায়নার কান্ট্রি ম্যানেজার হান কুন বলেছেন, আমরা এমন এক সময় তিস্তা নদীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে এসেছি যখন এখানকার মানুষ জমি ভিটা সম্পদ হারিয়েছে। এজন্য আমরা শুনতে এসেছি এখানকার মানুষের কথা।

রংপুর অফিস
Printed Edition
Default Image - DS

ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্প কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মন্তব্য করে পাওয়ার চায়নার কান্ট্রি ম্যানেজার হান কুন বলেছেন, আমরা এমন এক সময় তিস্তা নদীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে এসেছি যখন এখানকার মানুষ জমি ভিটা সম্পদ হারিয়েছে। এজন্য আমরা শুনতে এসেছি এখানকার মানুষের কথা। এ প্রকল্প ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো প্রভাব ফেলবে না কারণ এটা একটা বাণিজ্যিক প্রকল্প। যে প্রকল্পে মানুষের উপকার হয় সে প্রকল্পে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গৌণ এবং এ প্রকল্প পরিবেশে জন্য ক্ষতিকারক হবে না।

রংপুরের তিস্তা নিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের তিস্তা নদী বেষ্টিত উত্তরের ৫ জেলা অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কারী সংস্থা পাওয়ার চায়না। গতকাল ১০ মাচ সোমবার রংপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে তিস্তা পাড়ের মানুষ, তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনকারী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ অংশী জনদের অংশ গ্রহণে ‘তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনঃরুদ্ধার প্রকল্প’ নিয়ে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে সভায় প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন, পাওয়ার চায়নার সিনিয়র এক্সপাট মকবুল হোসেন।

পাওয়ার চায়নার সিনিয়র এক্সপাট জানান, ‘তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনঃরুদ্ধার প্রকল্প’ এর মাধ্যমে উত্তরের ৫ জেলা নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১০ কিলোমিটার নদীতে ১ হাজার ৩৩০ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হবে। পুরো নদীর তীর প্রতিরক্ষা কাজ, নদীর দু’ধারে বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজ, ৬৭টি গ্রোয়েন বা স্পার নির্মাণ ও মেরামত কাজ, নদীর দু’ধারে রোড নির্মাণ কাজ, ১৭০ দশমিক ৮৭ বর্গ কিলোমিটার ভূমি পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নকাজ এবং পরিবেশগত ও সামাজিক সুরক্ষা কাজ করা হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গ্রোয়েন নির্মাণ ও তীর প্রতিক্ষার কারণে নদী ভাঙ্গন রোধ হবে, বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত কাজের মাধ্যমে বন্যা ঝুঁকি হ্রাস হবে, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও নদী পুনরুদ্ধার হবে। খনন কৃত মাটি ভরাট করে নদীর তীরবর্তী ভূমি পুনরুদ্ধার করে উক্ত জমির উপর অর্থনৈতিক অঞ্চল, পাওয়ার প্লান্ট, স্যাটেলাইট টাউন নির্মাণ, সেচ ও কৃষি ব্যবস্থা উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা, শুস্ক মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহারের জন্য বর্ষা কালে শাখা নদীসহ ব্যারেজের উজানে তিস্তা নদীতে প্রয়োজনীয় পানি সংরক্ষণ করা এবং শুস্ক মৌসুমে পানি সংরক্ষণ করে প্রকল্প এলাকায় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নদী পাড়ের ১১ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা পাবে।

মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান। এ সময় বক্তারা, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, পানি সংরক্ষণ, পলিব্যবস্থাপনা, উত্তরের ৫ জেলার কৃষি রক্ষা, শিল্প-কারখানা স্থাপনসহ তিস্তা নদী নিয়ে টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং উত্তরের জীবন-জীবিকা ও জীববৈচিত্রে রক্ষায় মেগা প্রকল্প ছাড়া তিস্তায় বিচ্ছিন্ন কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করার আহ্বান জানান। সভায় পাওয়ার চায়নার কান্ট্রি ম্যানেজার হানকুনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।