খুলনায় নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কারাগারের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই ৯৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে এটি হস্তান্তর করার সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন কারাগার পরিচালনার জন্য ৬শ’ জনবল নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন কারাগার চালু হলে বর্তমান পুরোনো কারাগার থেকে বন্ধি স্থানান্তরসহ ধাপে ধাপে বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করবে কারা কর্তৃপক্ষ।

আগের কারাগারটি শতবর্ষী পুরোনো ও অতিরিক্ত জনাকীর্ণ। নতুন কারাগারটি একটি বহু প্রতীক্ষিত প্রকল্প, যা আধুনিক অবকাঠামো ও ধারণক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে কারাবন্দি ও কারারক্ষীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারাগারটির ৯৫ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

খুলনা গণপূর্ত বিভাগ (পিডব্লিউডি) জানিয়েছে, শেষ পর্যায়ের নির্মাণ কাজ ধারাবাহিক গতিতে চলছে। সম্প্রতি নির্মাণস্থল পরিদর্শনকালে খুলনা কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধান এবং জেলার মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পুরোনো খুলনা কারাগারটি ১৯১২ সালে ভৈরব নদীর তীরে নির্মিত। কারাগারটি মূলত ৬৭৮ জন বন্দির ধারণক্ষমতা নিয়ে তৈরি করা হলেও বর্তমানে এখানে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি বন্দি রয়েছে। তাছাড়া, কারাগারের পুরোনো এই কাঠামোটি নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্যও অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছে।

নতুন কারাগার কমপ্লেক্সটি খুলনা সিটি বাইপাস (রূপসা ব্রিজ রোড) রোডে ৩০ একর জমির ওপর নির্মিত হয়েছে। এটি ৪ হাজার বন্দির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হলেও, বর্তমান অবকাঠামোতে ২ হাজার বন্দি থাকতে পারবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে প্রয়োজনে আরও ভবন নির্মাণ করা হবে।

স্থানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, নতুন কমপ্লেক্সটি একটি আধুনিক আবাসিক এলাকার মতো দেখাচ্ছে, যেখানে টাইলসযুক্ত হাঁটার পথ, সাজানো বাগান ও নতুন রং করা ভবন রয়েছে। এখানে মোট ৫২টি ভবন নির্মিত হয়েছে।

নতুন কারাগারটিতে বিচারাধীন ও সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য আলাদা ইউনিট, অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বিশেষ ব্যারাক এবং নারী বন্দিদের জন্য হাসপাতাল, কাজের জায়গা ও একটি মোটিভেশন কেন্দ্রসহ আলাদা অংশ রয়েছে। এছাড়া, এখানে ৫০ শয্যার একটি সাধারণ হাসপাতাল, কারা কর্মীদের সন্তানদের জন্য একটি স্কুল, একটি গ্রš’াগার, ডাইনিং হল, সেলুন ও লন্ড্রি সুবিধাও রয়েছে। শিশুসহ নারী বন্দিদের জন্য একটি বিশেষ ওয়ার্ড ও ডে-কেয়ার সেন্টার রয়েছে, যেখানে শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থা আছে। পুরুষ ও মহিলা উভয় বন্দির জন্যই আলাদা নামাজের ঘর, কাজের জায়গা ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের স্থান রয়েছে।