এম এ কবীর, ঝিনাইদহ : চারদিকে পানি থৈ থৈ। দেখলে মনে হবে অথৈ নদী। মাঠের পর মাঠ কৃষকের ফসলি জমি পানির নিচে। হাজার হাজার হেক্টর ধানক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় বাড়ছে কৃষকের আহাজারী। তবে পানি নিষ্কাশনের নেই কোন উদ্যোগ।
সরজমিন দেখা যায়, ঝিনাইদহের সদর উপজেলার সাধুহাটী ও মধুহাটী ইউনিয়নে বিএডসির খননকরা খালগুলো ভরাট হয়ে তা এখন কৃষকের গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় মাঠের পর মাঠ ডুবে আছে। এতে এলাকার ত্রিশ গ্রামের কৃষক পড়েছে বিপাকে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সাধুহাটি ইউনিয়নের নাথকুন্ডু, ডহরপুকুর, বেজিমারা, বংকিরা, ছাইভাঙ্গা, পোড়াহাটি, শরৎগঞ্জ, আসাননগর, ভুলটিয়া, দশমাইল, জীব্নে, ওয়ারিয়া, শ্যামনগর, ছয়ঘরিয়া, মামুনশিয়া, চোরকোল, শ্রীপুর, পয়াদপুর, রাঙ্গিয়ারপোতা, ডাকবাংলা, বেড়াশূলা, বাথপুকুর, মাটিককুমড়া, নবিননগর, গোবিন্দপুর, যাদবপুর, গোপালপুর, দোবিলা গ্রামের মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান বংকিরা গ্রামের কাজলের খাল,পয়াদপুর খাল এবং মামুনশিয়া খাল দীর্ঘদিন খনন না করায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে গত বিগত ৫ বছর যাবৎ কৃষকরা এই মাঠে ফসল ফলাতে পারছে না। এ বছর টানা বৃষ্টিতে মাঠের পানি গ্রামের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
মামুনশিয়া গ্রামের কৃষক তালেব মিয়া জানান, তারা বিএডিসি ঝিনাইদহ দপ্তরে যোগাযোগ করলে কর্মকর্তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেন এবং ভরাট হওয়া খাল খনন করা হবে বলে আশ^াস দেন। কিন্তু তারা আশার বানী শোনালেও কোন কাজ হয়নি। কৃষকের ফসল বাঁচাতে কাজলের খাল, মামুনশিয়া খাল এবং পয়াদপুর খাল খননের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী বলেও ওই কৃষক জানান।
রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের কৃষক মোমিন জানান, ১০ গ্রামের পানি কাজল খাল দিয়ে বের হয়ে যায়। এই পানি ভেদড়ির বিল হয়ে মামুনশিয়া খাল দিয়ে পয়াদপুর খালের ভেতর দিয়ে চিত্রা নদীতে পড়ে। কিন্তু উৎস্যমুখ কাজলের খাল ভরাট হয়ে কচুরিপনায় ভরে গেছে। ফলে পানি বের হতে পারছে না। এতে বংকিরা, গোবিন্দপুর, মোহাম্মদপুর, আসাননগর, মামুনশিয়া ও চুয়াডাঙ্গার জীবনা গ্রামের পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, জলাবদ্ধতার বিষয়টি তুলে ধরে তারা এলাকার খালগুলো খননের জন্য বিএডিসির ক্ষুদ্রসেচ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। এলাকাবাসী দ্রুত খালগুলো খনন করে কৃষকদের ফসল রক্ষায় এগিয়ে আসবে বলে তাদের দাবী।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ বিএডিসির (সেচ) সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ কুমার বিশ্বাস জানান, কৃষকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তিনি সরজমিন পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে মাঠের পর মাঠ পানিতে ডুবে আছে। পানি বের হতে পারছে না। তিনি এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। আশা করা যায় দ্রুতই বিষয়টি সমাধান করতে পারবো।