কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবিরে প্রথমবারের মতো শরণার্থীদের নিজস্ব নামে নিবন্ধিত বৈধ সিম কার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে। আগে তারা অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করা বা অবৈধভাবে সংগৃহীত সিম ব্যবহার করলেও এবার সরকারিভাবে তাদের হাতে বৈধ সিম তুলে দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। প্রথম ধাপে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে বৈধ সিম কার্ড দেওয়া হবে।
প্রথম দিন ইউনাইটেড কাউন্সিল অব রোহাং (ইউসিআর)–এর সভাপতি ও নির্বাহী সদস্যদের হাতে সিম কার্ড তুলে দেন আরআরআরসি মিজানুর রহমান।
তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের ব্যবহৃত সব অবৈধ সিম দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হবে। শুধুমাত্র বৈধভাবে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করার অনুমতি থাকবে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং অবৈধ সিম ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আসবে।
আরআরআরসি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন অপারেটরের সিম অবৈধভাবে ব্যবহার করছিলেন, যা নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। এ কারণেই সরকার রোহিঙ্গাদের বৈধ সিম ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিটিআরসি ও চারটি মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। যেহেতু রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাই তাদের জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) প্রদত্ত ‘প্রোগ্রেস আইডি’ ব্যবহার করে সিম রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এই প্রক্রিয়ায় ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব রোহিঙ্গারা সিম পেতে পারবেন। মোবাইল অপারেটররা রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা নম্বর সিরিজ নির্ধারণ করেছে। ইউএনএইচসিআরের তথ্য নিরাপদভাবে সংরক্ষিত থাকবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ডেটা সেন্টারে, যা পরে শরণার্থী কমিশনারের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হবে।
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতারা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপ তাদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। তারা বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে অন্যের নামে সিম ব্যবহার করতাম, যার ফলে নানা অভিযোগ উঠত। এখন নিজেদের নামে বৈধ সিম পেলে সেই অভিযোগ দূর হবে এবং যোগাযোগ সহজ হবে।”