কৃষি ব্যাংক রূপসা ঘাট শাখায় ভল্ট ভেঙে ১৬ লক্ষাধিক টাকা লুটের ঘটনায় রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পুলিশ ঘটনার মূল হোতা ইব্রাহিম মটরস-এর স্বত্ত্বাধিকারী মো. ইউনুস শেখ (৩৮) কে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া ১ লাখ ৫২ হাজার ৯১০ টাকা, দরজা কাটার স্টোন কাটিং ডিস্ক ও গ্রান্ডিং মেশিন উদ্ধার করেছে। সম্প্রতি পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেসব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
খুলনা জেলার পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) সাইফুল ইসলামের নেত্বত্বে রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ও জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক (নি.) মুক্ত রায় চৌধুরী পিপিএম (বার) এর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস আভিযানিক দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে কৃষি ব্যাংক রূপসা ঘাট শাখার ভল্ট হতে টাকা লুটের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত ১৭ আগস্ট ভোর রাতে রূপসা কৃষি ব্যাংক ভবন থেকে নিকলাপুর গ্রামের মো. ইনছান শেখের ছেলে ব্যাংক সংলগ্ন ইব্রাহিম মটরস-এর স্বত্বাধিকারী মো. ইউনুস শেখ (৩৮) কে পুলিশ হেফাজতে নেয়। তাকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ব্যাংকের ভল্ট হতে লুট হওয়া ১৬ লাখ ১৬ হাজার টাকার মধ্যে ১ লাখ ৫২ হাজার ৯১০ টাকা এবং লুটের কাজে ব্যবহৃত ভল্ট এর দরজা কাটার স্টোন কাটিং ডিস্ক ও গ্রান্ডিং মেশিন উদ্ধার করা হয়। আটক ইউনূস শেখ কৃষি ব্যাংক ভবনের ৪র্থ তলায় ভাড়াটিয়া এবং ভবনের নিচতলায় তার একটি ওয়ার্কশপ রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন বলেন, গ্রেফতারত ইউনুস শেখের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার জন্য সোমবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। স্বীকারোক্তিতে বলেন, তিনি একজন ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি। অনেক মানুষ তার কাছে টাকা পাবে। ঋণের এ টাকা পরিশোধের জন্য তিনি কৃষি ব্যাংক রূপসা ঘাট শাখায় লোন নেওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তিনি ব্যাংক থেকে টাকা লুটের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মতে তিনি গত ১৫ আগস্ট কৃষি ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১৬ লাখ ১৫ হাজার ৭০ টাকা লুট করে।
স্থানীয়রা জানান, ইউনূস পেশায় একজন লেদ মিস্ত্রি, ট্রাকের যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করতেন তিনি। লোহা কাটার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই তিনি ব্যাংকের ভল্ট ও তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। ভোর রাতে ব্যাংকে কোনো নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান তিনি।
কৃষি ব্যাংকের রূপসা ঘাট শাখা ব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে গত শনিবার বিকেলে একটি মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতে ব্যাংকের তিনজন নিরাপত্তা গ্রহরী আবুল কাশেম, তরিকুল ইসলাম ও আবজাল হোসেনকে থানায় নিয়ে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। সোমবার তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।