ছাতক (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা : ছাতকে চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা আয়ধন বিবি হত্যা মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। মামলার রায়ে বিজ্ঞ আদালত প্রধান আসামী আলী আহমদ ও তার বোন রেহেনা বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও দু’জনকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। হত্যা মামলা রুজুর দীর্ঘ ৬ বছর ৩ মাস পর বিজ্ঞ আদালত রায় প্রদান প্রদান করা হলো।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা প্রথম জজ আদালতের বিচারক তেহসিন ইফতেখার এই রায় দেন। যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড আসামী আলী হোসেন উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের সুড়িগাঁও গ্রামের মৃত আফিজ আলীর ছেলে আলী হোসেন ও তার বোন রেহেনা বেগম রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের সুড়িগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ৪ মেয়ে ও এক ছেলে কামাল উদ্দিন দুবাই প্রবাসী। স্ত্রী আয়ধন বিবি তার নাতি তানভির আহমদকে নিয়ে নিজ বাড়ীতে বসবাস করতেন। দুবাই প্রবাসী কামাল উদ্দিন তার স্ত্রী রেহেনা বেগমের নামে নতুন বাড়ী করতে সাম্প্রতিক সময়ে ৬ লাখ টাকা পাঠায়। ওই টাকা দিয়ে স্ত্রী রেহেনা বেগম তার এক ভাইকে ইতালীতে পাঠানোর পর শাশুড়ি আয়ধন বিবি’র সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। প্রায় ৬ মাস পূর্বে রেহেনা তার ছেলে তানভিরকে শাশুড়ির কাছে রেখে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে পিতার বাড়ী চলে যায়। ২০১৮ সালের ১৩ জুন রাত সাড়ে ১১টায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে আয়ধন বিবিকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আয়ধন বিবি’র নাতি তানভির আহমদ জানায়, তার মামা আলী আহমদসহ কয়েকজন মিলে তার দাদীকে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত আয়ধন বিবি’র হত্যার ঘটনায় থানায় পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে সুনামগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালতে এজাহার দায়ের করা হয়। আদালতের নির্দেশে পুলিশ আয়ধন বিবি হত্যা মামলাটি থানা পুলিশ এফআইআরভুক্ত করে। পরে মামলাটি থানা থেকে সুনামগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক তদন্ত শেষে মো. ফারুক আহমদ ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই প্রধান আসামী আলী আহমদ ও তার বোন রেহেনা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) প্রদান করেন। নিহত বৃদ্ধা আয়ধন বিবি’র মেয়ে ও মামলার বাদী মিনারা বেগম মামলা রায়ের বিষয়ে বলেন, আমি আমার মায়ের হত্যা মামলার আদালত কর্তৃক এই রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ প্রকাশ করছি। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, মো. আব্দুল আজাদ ও রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সরকারি অতিরিক্ত কৌঁসুলি (এপিপি) শেরেনুর আলী এবং আসামীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন আব্দুল আহাদ।