স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, জনগণের সেবায় দিনরাত ২৪ ঘন্টা কাজ করা বাহিনীই হলো পুলিশ। সচেতন হয়ে সেবাপ্রত্যাশীদের সহজে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সমাজে ও ব্যক্তিজীবনে মূল্যবোধের চর্চা ফিরিয়ে আনতে হবে। নিজেদের ভুলগুলো খুঁজে বের করে সংশোধনের চেষ্টা অব্যাহত রাখাও আবশ্যক কাজ হিসেবে বিবেচনা করা দরকার। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের অডিটোরিয়ামে খুলনা বিভাগের পুলিশ অফিসারদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, সকল সীমাবদ্ধতা উপেক্ষা করে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকাই আমাদের দায়িত্ব। স্রষ্টার দেওয়া মেধা ও প্রজ্ঞার যতটা মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা যায় ততই ভালো। পুলিশ হিসেবে সদয় আচরণ ও সুবিচারের নজির মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, পুলিশ প্রকৃতপক্ষে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, যারা মানুষের কল্যাণে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানে নতুন বাংলাদেশ গড়তে যারা জীবন দিয়েছে তারা সময়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান। পরিবর্তিত সময়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি যথাসম্ভব কমানোর চেষ্টা আমাদের মাঝে থাকা উচিত।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন পুলিশের খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ের এবং খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল ও পিরোজপুর জেলার সকল দপ্তর প্রধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভূমিকা পালন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সিনিয়র সচিব বলেন, সরকারের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ হয় সরকারি দপ্তরগুলোর মাধ্যমে। সরকারি কর্মকর্তাদের এটাকে জনসাধারণের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে অনুধাবন করতে হবে এবং সে অনুসারে কাজ করতে হবে। জনগণের টাকায় সরকারি কর্মচারীদের বেতন হয়। সুতরাং জনগণকে তার প্রাপ্যসেবা বা তাদের হক থেকে বঞ্চিত করার কোন সুযোগ নেই। সেবা নিতে সরকারি দপ্তরে আসা সাধারণ মানুষরাই যে দেশের মালিক, সেকথা আমরা ভুলে যাই। সেবা প্রদানের জন্য প্রয়োজনে জনসাধারণের কাছে যেতে হবে। কিভাবে সহজে সেবা দেওয়া যায় তা খুঁজে বের করতে হবে। সদয় আচরণের মাধ্যমে মানুষের মাঝে সুবিচার পৌঁছে দেওয়া এখন সময়ের দাবী।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে দেশের পরিবর্তনের জন্য আমাদের সন্তানেরা রাস্তায় নেমে জীবন দিতে এক মুহূর্তের জন্য দ্বিধা করেনি। মানুষের আত্মত্যাগের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। ১৯৭১ সালে আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছি। আবার ২০২৪-এ আমাদের সন্তানেরা আমাদের চোখের সামনে জীবন দিয়েছে, আর আমরা পরিবর্তন হতে পারবো না, তা হয়না। নিজেরা পরিবর্তন হয়ে দেশকে পরিবর্তন করার বিকল্প নেই।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তৃতা করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক।