বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির প্রবীণ রাজনীতিবিদ পাবনা---৫ আসন থেকে পাঁচবার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য মাওলানা আব্দুস সুবহান সাহেবের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সাক্ষী আ ত ম শহিদুজ্জামান নাসিম কে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
তিনি পাবনার ঈশ্বরদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলার আসামি । তিনি ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি।
এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জেলা সাক্ষী সুরক্ষা কমিটির সদস্য এবং জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবদুস সুবহানের বিরুদ্ধে মামলার প্রধান সাক্ষী।নাসিমকে গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা শহরের শেরশাহ সড়কের বেলতলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আবদুন নুর বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম ঈশ্বরদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় জড়িত ছিলেন। ওই ঘটনায় মামলা তদন্ত করে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, মাওলানা আবদুস সোবহান ছিলেন পাবনা-৫ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির। জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী এই নেতাকে ২০১২ সালে গ্রেপ্তার করে একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
প্রথমে পাবনার স্থানীয় একটি মামলা গ্রেপ্তার দেখানো হয়, পরে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট করা হয়। সেই থেকে বন্দি ছিলেন এই জামায়াত নেতা। ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ক্যাঙ্গারু কোর্টে আবদুস সোবহানকে আজীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। সেই সাজা নিয়ে ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কারাগারেই মারা যান তিনি।
এ বিষয়ে মাওলানা আবদুস সোবহানের ছেলে নেছার আহমেদ নান্নু বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমার বাবার বিরুদ্ধে মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম। তিনি আদালতে মিথ্যা সাক্ষী দিয়ে আমার বাবাকে আজীবন কারাদণ্ডাদেশ দিতে আদালতকে সহায়তা করেন। তার গ্রেপ্তারের খবরে এলাকায় স্বস্তি বিরাজ করছে।
পাবনা জেলা জামায়াতের আমির ও ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা নাসিম একজন দুর্বৃত্ত। আপাদমস্তক অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত তিনি।
ঈশ্বরদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও মানবাধিকার সংস্থার উভয় দায়িত্বে থাকাকালীন আর্থিক অনিয়ম ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজের জন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া তিনি মেঘনা ইনস্যুরেন্সের ঈশ্বরদী শাখার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালনকালেও আর্থিক অনিয়মের কারণে গ্রেপ্তার হয়ে অনেকদিন কারাগারে ছিলেন।