কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মরিচা ইউনিয়নের ভূরকা, হাটখোলা ও কোলদিয়া এলাকা নিয়ে এ ভাঙন চলমান রয়েছে। ভাঙন রোধে হাটখোলা থেকে ভূরকা পর্যন্ত ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তাতে কিছুটা স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ভাঙনের বাকি ৩ কিলোমিটার নিয়ে তাদের মাঝে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। দুটি প্রকল্পের আওতায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ লাখ ৩৫ হাজার জিওব্যাগ ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকনুজ্জামান।
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, পদ্মায় কিছুদিনের মধ্যে নতুন পানি এলে এর আগ্রাসী রূপ আরও বেড়ে যাবে। বাকি ৩ কিলোমিটারে এখনই ব্যবস্থা না নিলে এবারের বর্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই পুরো এলাকাতে ভাঙন রোধে সাময়িকভাবে জিওব্যাগ ব্যবহারের পাশাপাশি দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে চলা ভাঙনে নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা আবাদি জমি,বসতবাড়ি,কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঝুঁকিতে রয়েছে নদীর পাড় থেকে মাত্র ৩০ ফুট দূরে থাকা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত থেকে আসা বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি-বেসরকারি আরও অনেক স্থাপনা।
পদ্মা পাড়ের বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, একসময় তাদের বাড়ি থেকে আবাদি জমিতে যেতে ৫ কিলোমিটার হাঁটতে হতো; এখন নদীর পাড়ে আসতে সময় লাগে মাত্র দুই মিনিট। চোখের সামনে পদ্মার আগ্রাসী ভাঙনে হারিয়েছেন চাষের জমি। দ্রুত ভাঙন রোধে টেকসই ব্যবস্থা না নিলে বসতভিটাও হারাতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
নদী পাড়ের আরেক বাসিন্দা জামাত আলী বলেন, ভাঙন সাময়িকভাবে রোধে সরকারের উদ্যোগে আমরা খুশি। তবে যত দিন পর্যন্ত স্থায়ী ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না হচ্ছে, তত দিন আমরা উদ্বেগের মধ্যেই থাকব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, আমরা ১ কিলোমিটার এলাকার ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু“ করেছি। বাকি ৩ কিলোমিটারের জন্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়েও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে।