রাজশাহীতে ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, ভারত পানির অধিকারকে জিম্মি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। ২০২৬ সালের পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করে চুক্তির পূর্ণ পর্যালোচনা করার আহ্বান জানান তাঁরা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে একটি র্যালি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯ বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটি আয়োজিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। সভাপতিত্ব করেন, কমিটির আহ্বায়ক নদী গবেষক ও লেখক মাহবুব সিদ্দিকী। সম্মানিত অতিথি ছিলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান, পিআইবি’র মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ও রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু: যহুর আলী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ। সভার শুরুতে ফারাক্কা লং মার্চ উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। সভায় উল্লেখ করা হয়, ফারাক্কা সমস্যাকে শুধু পানি সংকট নয়, বরং একটি আর্থসামাজিক, পরিবেশগত ও ভূরাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে দেখতে হবে। এই সংকট মোকাবিলায় মজবুত জাতীয় ঐক্য, সক্রিয় কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিকল্প নেই। এছাড়া ১৯৯৬ সালের বাংলাদেশ-ভারত গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রকৃত পানি পাচ্ছে কিনা তা জনগণকে অবহিত করার আহ্বান জানানো হয়। ২০২৬ সালের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করে চুক্তির পূর্ণ পর্যালোচনা, নতুন চুক্তিতে ১৯৭৭ সালের গ্যারান্টি ক্লজ সংযুক্ত করা, যৌথ নদী কমিশনে নেপালকে অন্তর্ভুক্ত করা ও নিয়মিত বৈঠক করার, ভারত কর্তৃক আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রভাব বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার এবং জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে আঞ্চলিক পানি ফোরাম গঠন করে প্রয়োজনে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।