প্রায় ৪০ বছর পর চট্টগ্রাম বন্দরে বিভিন্ন সেবা খাতের ট্যারিফ বা মাশুল বাড়ানো হয়েছে, যা গতকাল সোমবার থেকে কার্যকর হয়েছে। ব্যবসায়ীদের আপত্তি সত্ত্বেও নতুন ট্যারিফ অনুযায়ী, বিভিন্ন খাতে গড় মাশুল ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। জানা গেছে, ১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ বাড়ানো হলো। গত জুনে যখন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এই ৪১ শতাংশ ট্যারিফ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছিল, তখন থেকেই বন্দর ব্যবহারকারীরা এর বিরোধিতা করে আসছেন। ২ জুন নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সভায় ব্যবসায়ীরা তাদের আপত্তির কথা জানান। তারা মাশুল বৃদ্ধি আপাতত স্থগিত রাখার অথবা সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বন্দরের প্রস্তাব অনুযায়ীই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

নতুন এই ট্যারিফ বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে কনটেইনার পরিবহণ খাতে। প্রতিটি ২০ ফুট লম্বা কনটেইনারের মাশুল প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। আগে যেখানে ১১ হাজার ৮৪৯ টাকা দিতে হতো, এখন সেখানে ১৬ হাজার ২৪৩ টাকা দিতে হবে। এছাড়াও, কনটেইনারবাহী জাহাজের ক্ষেত্রে আমদানি ও রফতানি কনটেইনারের মাশুল যথাক্রমে ৫ হাজার ৭২০ টাকা এবং ৩ হাজার ৪৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। পণ্য ওঠানামার ক্ষেত্রে প্রতিটি কনটেইনারে প্রায় তিন হাজার টাকা অতিরিক্ত মাশুল দিতে হবে। পণ্যের প্রতি কেজিতে ১ টাকা ২৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ টাকা ৭৫ পয়সা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল আলম সুজন এ বিষয়ে বলেন, ‘এই অতিরিক্ত মাশুলের বোঝা শেষ পর্যন্ত আমদানি ও রফতানিকারকদের বহন করতে হবে। এর ফলে উৎপাদনমুখী ও রফতানিমুখী শিল্পগুলোও চাপে পড়বে, যার চূড়ান্ত প্রভাব পড়বে সাধারণ ভোক্তাদের ওপর।’

নতুন ট্যারিফ বৃদ্ধির মূল বিষয়গুলো এক নজরে: ট্যারিফ বৃদ্ধি: গড়ে ৪১% বৃদ্ধি। সর্বশেষ বৃদ্ধি: ১৯৮৬ সালে। ২০ ফুট কনটেইনার: ১১,৮৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৬,২৪৩ টাকা।

কনটেইনার প্রতি মাশুল বৃদ্ধি: প্রায় ৩০০০ টাকা। পণ্যের মাশুল: প্রতি কেজিতে ৪৭ পয়সা বৃদ্ধি।