যশোর সংবাদদাতা : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এইডস আক্রান্ত এক গর্ভবতী নারীর সিজারিয়ান অপারেশন নিয়ে চিকিৎসক মহলে দ্বিধা ও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। একদিকে রয়েছে রোগীর চিকিৎসা পাওয়ার মানবিক অধিকার, অন্যদিকে রয়েছে হাসপাতালের অন্যান্য রোগী ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-নার্সদের সংক্রমণ ঝুঁকি। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন রোববার (১ জুন) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মাস তিনেক আগে গর্ভবতী ওই নারীর দেহে এইচআইভি/এইডস সংক্রমণ ধরা পড়ে। বর্তমানে সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসায় সিজারিয়ান অপারেশন প্রয়োজন। তবে সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় এই অপারেশন সম্পন্ন হলে অপারেশন থিয়েটার তিন দিন বন্ধ রাখতে হতে পারে। এতে হাসপাতালের স্বাভাবিক অপারেশন কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলে উদ্বেগ জানিয়েছেন অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকরা।
গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ইয়াসমিন আক্তার জানান, রোগী যখন চিকিৎসকের কাছে আসে, তখন তাকে চিকিৎসা দেওয়া ফরজ। তবে সেই চিকিৎসা সুষ্ঠুভাবে ও সুরক্ষিত পরিবেশে দেওয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।
এদিকে, অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকদের মতে, এইডসে আক্রান্ত রোগীর জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া উচিত। কেননা, প্রতিদিন যশোর আড়াইশো বেড হাসপাতালে গড়ে ১৫-২০টি গাইনি অপারেশন, ৭-১০টি সার্জারি, ৬-৮টি অর্থোপেডিক্স ও অন্যান্য জরুরি অপারেশন হয়ে থাকে। তিন দিন ওটি বন্ধ থাকলে অন্যান্য রোগীদের জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত বলেন, ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। আপাতত গাইনি বিভাগ সিদ্ধান্ত নেবে তারা অপারেশন করবে নাকি রোগীকে রেফার করবে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা জানান, এইডস আক্রান্ত রোগীর সিজার সাধারণ হাসপাতালে করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশেষায়িত হাসপাতালে এই অপারেশন করাই যুক্তিযুক্ত।
পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সংবেদনশীলতা বিবেচনায় রোববারের সিদ্ধান্তে হাসপাতালের মানবিক দায়িত্ব ও সংক্রমণ ঝুঁকি দুই দিককেই গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।