গাজীপুরের শ্রীপুরে চার বছরের শিশু আনাস খান নিখোঁজের তিন দিন পর বিলে কচুরিপানার নিচে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে আটক প্রতিবেশী নারী শাহিনূর বেগম ওরফে হাসিনার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে শ্রীপুরের চিনাশুখানিয়া মধ্যপাড়া এলাকার একটি খাল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার, ড. চৌধুরী মোঃ যাবের সাদেকের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি), আমিনুল ইসলাম, বিপিএম-এর নেতৃত্বে ডিবির একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে হাসিনাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে আনাস প্রতিদিনের মতো খেলনা সাইকেল নিয়ে প্রতিবেশী নজরুল মোল্লার বাড়িতে যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন নজরুলের স্ত্রী শাহিনূর বেগম ও তার প্রেমিক মোমেন। আনাস হঠাৎ ঘরে ঢুকে তাদের অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেললে, মোমেন শিশুটির গলা টিপে ধরে। পরে খাটের নিচ থেকে একটি ধারালো কাচি এনে আনাসের ডান চোখে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। হত্যার পর আনাসের লাশ বিলে ফেলে গুম করার চেষ্টা করা হয়।
পুলিশ জানায়, শাহিনূর বেগম জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আনাসের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয় এবং হত্যায় ব্যবহৃত কাচিটিও তার রান্নাঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শিশুর দাদা হাছেন আলী খান বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা (নং–২৬, তারিখ–১১/১১/২০২৫, ধারা–৩০২/২০১/৩৪) দায়ের করেছেন। আটক শাহিনূর বেগমকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং পলাতক আসামি মোমেনকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার, ড. চৌধুরী মোঃ যাবের সাদেক বলেছেন, এটি অত্যন্ত নৃশংস ও মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। ডিবির টিম দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে। পলাতক আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
৫ বছরের নিষ্পাপ আনাসের মৃত্যুতে শ্রীপুরজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে।