বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ শুক্রবার। দিবসটি পালন উপলক্ষে এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন, নড়াইল জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে এসএম সুলতানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে সুলতান কমপ্লেক্সে সকালে পবিত্র কুরআনখতম, শিশুস্বর্গে শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, শিল্পীর সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন, সুলতানের রূহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল, এসএম সুলতান স্বরণে শিশুস্বর্গে শিশুদের আঁকা চিত্রকর্ম প্রদর্শনী, সকাল সাড়ে ১০টায় পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভা। জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি শারমিন আক্তার জাহান জানান, সুলতানের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযথভাবে পালনের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
১৯২৪ সালের ১০ আগষ্ট শিল্পী সুলতান নড়াইল শহরের মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রাজমিস্ত্রি পিতা মেছের আলীর নান্দনিক সৃষ্টির ঘঁষামাজার মধ্য দিয়ে ছোট বেলার লাল মিঞার (সুলতান) চিত্রাংকনে সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ হয়। সুলতানের শিল্পকর্মের বিষয়বস্তু ছিল বাংলার কৃষক, জেলে, তাঁতি কামার, কুমার, মাঠ, নদী, হাওর, বাঁওড়, জঙ্গল, সবুজ প্রান্তর ইত্যাদি। ১৯৪৬-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত শিল্পী সুলতানের ছবি ভারতের সিমলা, পাকিস্তানের লাহোর, করাচি, নিউইয়র্ক, বোস্টন, মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন, এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ও জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ঢাকায় খ্যাতনামা বিভিন্ন চিত্রশিল্পীদের সঙ্গে যৌথভাবে প্রদর্শিত হয়। চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্ট আর্টিস্ট এবং ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্পী সম্মাননা হিসেবেও স্বীকৃতি পান তিনি।
সুলতান ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য সুলতান মাহমুদ জানান, সুলতান ছিলেন মাটি ও মানুষের শিল্পী।তাঁর চিত্রকর্মের বিষয়বস্তু ছিল গ্রামের সংগ্রামী খেটে খাওয়া মানুষ। সুলতানের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য তাঁর নিজ বাড়িতে নির্মিত হয়েছে এস এম সুলতান স্মৃতি সংগ্রহশালা। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর চিরকুমার, অসাম্প্রদায়িক এই শিল্পী দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টে ভোগার পর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। নড়াইলের নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় তাকে সমাহিত করা হয়।