জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, সিলেট জেলা আমীর ও সিলেট-১ আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেছেন-ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদরা বুক পেতে না দাঁড়ালে ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ভিন্ন হতো। আবু সাঈদের শাহাদাত ছিলো ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত সূচনা কাল। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমাতে গণহত্যার নৃশংস মহড়া শুরু করেছিল। যা ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট শক্তির চূড়ান্ত পতন নিশ্চিত করে।
তিনি গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর বন্দরবাজারে সিলেট মহানগর জামায়াত আয়োজিত শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
মাওলানা হাবিবুর রহমান আরও বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহীদ ও আহতরা দেশ মাতৃকার গর্বিত সন্তান। তাদের শাহাদাত ও ত্যাগ বৃথা যেতে দেয়া হবেনা। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করলে এই জাতি আর কোন দিন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবেনা। শহীদ আবু সাঈদসহ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের জন্য সুস্থতা কামনা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুলের সভাপতিত্বে ও সহকারী সেক্রেটারী জাহেদুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলী, বায়তুল মাল সেক্রেটারী মুফতী আলী হায়দার, জামায়াত নেতা মাওলানা এটিএম শামসুদ্দিন, মুহাম্মদ আজিজুল ইসলাম ও এখলাছুর রহমান প্রমূখ।
আলোচনা সভা শেষে শহীদ আবু সাঈদসহ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাতবরণকারী সকল ছাত্র-জনতার রুহের মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর নায়েবে আমীর ড. নূরুল ইসলাম বাবুল বলেন, শহীদ আবু সাঈদদের স্বপ্ন ছিল একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। আর জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। ফ্যাসিবাদের পতনের পরও দেশে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ও খুন কোনভাবেই কাম্য নয়। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে। এই দেশে আর নতুন কোন ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে দেয়া যাবেনা।
সিলেটে বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের প্রচার মিছিল :আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যোগে জামায়াতের জাতীয় মহাসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে সিলেট মহানগর জামায়াত ইসলামী সিলেট মহনগরীর উদ্যেগে পাঠানটুলা, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, মেজরটিলা, দক্ষিণ সুরমাসহ বিভিন্ন স্থানে গতকাল বুধবার প্রচার মিছিল বের করা হয়েছে।
মিছিল পরবর্তী এসব সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জামায়াত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ৭ দফা দাবীতে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। এই ৭ দফা জুলাই-আগস্টের শহীদ ও গাজীদের স্বপ্নের বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে। ঢাকায় ১৯ জুলাইয়ের জাতীয় মহাসমাবেশ হবে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঐতিহাসিক সমাবেশ। এটি হবে দেশে নতুন ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকাতে দেশপ্রেমিক জনতার সমাবেশ। জাতীয় নির্বাচনের আগে সকল গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতসহ ৭ দফা দাবী বাস্তবায়নে দেশপ্রেমিক জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। সমাবেশ সফল করতে শহর, গ্রাম, পাড়া-মহল্লায় ব্যাপকহারে গণসংযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
সমাবেশগুলোতে অন্যন্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর জামায়াতের আমীর মোঃ ফখরুল ইসলাম, নায়েবে আমীর ড. নুরুল ইসলাম বাবুল, সেক্রেটারী মোঃ শাহজাহান আলী, সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট আব্দুর রব ও মোঃ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, নগর বায়তুলমাল সম্পাদক মুফতি আলী হায়দার, জামায়াত নেতা আলাউদ্দিন, জুনাইদ আল হাবিব, শামীম আহমদ, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুর রহমান দিলাওয়ার, আশফাক আহমদ চৌধুরী আনাস, ফয়সল আহমদ, ফয়জুল হক, আতিকুর রহমান আতিক, প্রভাষক দুলাল আহমদ ও আব্দুর রাজ্জাক রাজন প্রমূখ।