মাহমুদ শরীফ, কুমারখালী (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা : কুষ্টিয়া সুগার মিলের উৎপাদন বন্ধ হয়েছে ২০২০ সালে। ধারাবাহিক লোকসানের কবলে পড়া মিলটি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত তা আর হ”েছনা। সুগার মিলের কার্যক্রম গুটিয়ে সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার কথা ভাবছে সরকার। এই লক্ষ্যে কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। সরকারের উ”চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ঘুরে গেছেন মিল এলাকা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এটি বাস্তবায়িত হলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হবে।
বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর ৬টি সুগার মিল চালুর সিদ্ধান্ত নিলেও সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সুগার মিলের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেই লক্ষ্যে মিলের ২২০ একর জায়গায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা ভাবছে সরকার। চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বেজা)’র গভর্ণিং বোর্ডের অষ্টম সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য কুষ্টিয়া সুগার মিল, বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের করিম জুট মিলস লি: ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল কর্পোরেশনের মোহিনী বস্ত্রমিলের অব্যবহৃত জমি ও অবকাঠামো বেজা কর্তৃক ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে গঠিত কমিটির একটি দল গত ২৩ সেপ্টেম্বর সরেজমিন পরিদর্শনে আসে কুষ্টিয়া সুগার মিলে। স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিশেষ করে কারখানাও ঘুরে দেখেন তারা।
১৯৬৫-৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কুষ্টিয়া সুগার মিল মাড়াই কার্যক্রম শুরুর বেশ কয়েক বছর লাভের মুখ দেখলেও নব্বই দশকের পর ধারাবাহিক লোকসানে পড়ে মিলটি। পাহাড়সম লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে ধিকধাক করে চলতে থাকে মিলের উৎপাদন। লোকসানের বোঝা দিনকে দিন বাড়তে থাকায় দেশের ১৫টি সুগার মিলের মধ্যে কুষ্টিয়া সুগার মিলসহ ৬টি মিলের উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এতে মিলের কয়েকশ’ শ্রমিক কর্মচারীর পাশাপাশি সংকটে পড়েন ৪০ হাজার আখ চাষী। বর্তমানে শত কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হবার উপক্রম । অযতœ আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। যদিও সুগার মিলের শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মিলে পদায়ন করা হয়।
কুষ্টিয়া সুগার মিল এলাকার বাসিন্দারা জানান, সরকারী সিদ্ধান্ত নি:সন্দেহে ইতিবাচক। তবে সুগার মিলকে রেখে মিল এলাকার বিপুল সম্পত্তি বেজা ব্যবহার করতে পারে। এক্ষেত্রে সুগার মিলও সচল থাকবে পাশাপাশি নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। সেক্ষেত্রে সরকার পরিকল্পনা মাফিক অগ্রসর হলে ভালো কিছু হবে বলে মনে হয়।