আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবেই-এমন দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অস্থিরতা বা সংকট তৈরি হতে দেওয়া হবে না।
গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের প্যারেড ময়দানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। সফরসূচি অনুযায়ী সেদিকেই হেলিকপ্টারযোগে পৌঁছান তিনি।
নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়ে প্রশ্ন করলে জামায়াতের আমীর বলেন, “নির্বাচনের আগে কিছু সমস্যার উদ্ভব হয়-এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা কোনোভাবেই সংকট তৈরি হতে দেব না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না-আল্লাহর হুকুমে, ইনশাআল্লাহ নির্বাচন হবেই।”
স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি না। কারণ বাস্তবতা এখন সে সুযোগ দেয় না। অবাস্তব কোনো দাবির পেছনে আমরা নেই।”
জোট রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো জোটে তারা যাচ্ছেন না। তবে বিভিন্ন দল ও শক্তির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হবে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।
চট্টগ্রামের সব আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের জয়ের প্রত্যাশা আছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি কোনো দলের বিজয়ের কথা বলি না। বলতে চাই জনগণের বিজয়ের কথা। জনগণের জয়ই আমাদের লক্ষ্য।”
পিআর বাস্তবায়নে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জনগণের স্বার্থেই পিআর বাস্তবায়ন হওয়া উচিত। আমরা ক্ষমতায় গেলে ইনশাআল্লাহ- পিআর বাস্তবায়ন করব।”
তিনি আরও বলেন, ৫৪ বছরে স্বাধীন দেশের প্রকৃত সম্ভাবনা বাস্তবায়িত হয়নি। সম্পদে সমৃদ্ধ চট্টগ্রামসহ পুরো বাংলাদেশ উন্নয়নের সুফল পায়নি। “কিছু মানুষের লুটপাট আর দুর্নীতির কারণে জনগণ বঞ্চিত হয়েছে। শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, শিল্পায়ন থমকে আছে, কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন কম-মূল কারণ দূরদর্শী, সৎ, দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের অভাব।”
২০২৪ সালের সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ সুযোগ গোটা জাতির। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সব মানুষের জন্যই আমরা কাজ করতে চাই।”
দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন যুদ্ধ হবে। কারো কাছে মাথানত করব না। দেশের রাজনীতি কোনো পরিবার বা দলের হাতে ইজারা যেতে পারে না- দেশের মালিক জনগণ।”
তিনি জানান, ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি দমন এবং ধ্বংসপ্রায় শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্গঠন হবে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। নৈতিক ও আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রতিও দেন তিনি।
অন্য রাজনৈতিক দলের বক্তব্যকে ঘিরে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমাদের ইতিবাচক এজেন্ডাই এত বেশি যে অন্যকে খোচানো বা জবাব দেওয়া এসবের সময় নেই।”
দিনের কর্মসূচিতে তিনি আকবর শাহ থানার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া বড় মাদরাসার বার্ষিক মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। সন্ধ্যায় তিনি জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরের ‘নির্বাচনী দায়িত্বশীল সম্মেলনে’ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।