২০২২ সালের জুলাই মাসে ভয়াবহ বন্যার কথা আজও ভুলতে পারেনি সিলেটের লাখো জনতা। পানিবদ্ধতার কারণে দিনের পর দিন মানুষকে অনাহারে থাকতে হয়েছে। কাচা-ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, কোটি টাকার গবাদি পশু বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। সেই ক্ষত শুকাতে না শুকাতে আবারো সিলেটে বন্যার আভাস দেখা দিচ্ছে। প্রধান প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারা, পিয়াইন, গুয়াইন, মনু ও সারি নদীর পানি বাড়ছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আভাস দেখা দিয়েছে বলে জানান বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

গতকাল সোমবার এক সতর্কবাতায় বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়েছে। এ দুই নদীর পানি আগামী ৩ দিন আরও বাড়তে পারে; তাতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর সুরমা নদী সংলগ্ন মাছিমপুর, ঝালোপাড়া, কাজিরবাজার, শেখঘাট ও কলাপাড়া এলাকায়া স্বরজমিনের ঘুরে দেখা যায় সত্যিই বাড়ছে সুরমার পানি। মঙ্গলবার রাতেই বৃষ্টি হলে উল্লেখিত এলাকায় নদীর পানি প্রবেশ করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার নি¤œাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ইতোমধ্যে কুশিয়ারা নদীর পানি সিলেটের বিয়ানীবাজারের আমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে ভারি থেকে অতি-ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এছাড়া আজ বুধবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগে এবং উজানে ভারতের মেঘালয়, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, বিহার ও ত্রিপুরায় বিচ্ছিন্নভাবে ভারি থেকে অতি-ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ঢলের পানিতে সুরমা ও কুশিয়ারা যেকোন মূহূর্তে উত্তাল হয়ে যেতে পারে। আগামী তিন দিন নদ নদীর পানি বাড়তে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রী নিহত

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় এক কলেজ ছাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহতের নাম ফরিদা আক্তার (২০)। ফরিদা বড়লেখা উপজেলার পূর্ব দক্ষিণভাগ গ্রামের আবদুল আহাদের মেয়ে। তিনি জুড়ী উপজেলার তৈয়বুন্নেছা খানম সরকারি কলেজের স্নাতক (পাস) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার জাঙ্গিরাই চত্বর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত সোমবার দুপুরে ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে কলেজে যান ফরিদা। বিকেল পাঁচটার দিকে পরীক্ষা শেষে ছোট ভাই ফরহাদের সঙ্গে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে একটি কাভার্ডভ্যান তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে পেছনের সিটে থাকা ফরিদা ছিটকে সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করার কথা বলেন। সিলেটে নেয়ার পথে ফরিদা মারা যান।

জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া দৈনিক সংগ্রামকে জানান, নিহত কলেজ ছাত্রীর পরিবার ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয়ায় লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।