মো. আবু ইউসুফ, মুরাদনগর (কুমিল্লা) থেকে : কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামে এক উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তির বিরুদ্ধে বেপরোয়াভাবে ড্রেজার চালিয়ে কৃষি জমি ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসী এবং ভুক্তভোগী পরিবার ড্রেজারের প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা বলছেন, এখনই এই অবৈধ ড্রেজিং বন্ধ করা না হলে মালিপাড়া গ্রামের শত শত বিঘা কৃষি জমি বিলীন হয়ে যাবে, যা শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতিই নয়, পরিবেশ এবং জীবিকার ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
ভুক্তভোগী হাজেরা বেগম ও রিয়াজুল করিম সাংবাদিকদের কাছে কান্নাকাটি করে বলেন, মালিপাড়া গ্রামের মৃত আবু মুসার ছেলে মাহবুব সরকার জিয়া দীর্ঘ ৩/৪ বছর ধরে ড্রেজার ব্যবহার করে তাদের পৈতৃক জমি ক্ষতিগ্রস্ত করে যাচ্ছেন। গত চার মাসে ড্রেজার চালিয়ে মাহবুব ১৫০ শতক আবাদি জমি অবৈধভাবে গ্রাস করে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা আরও জানায়, জমি রক্ষার জন্য তারা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে বারবার অভিযোগ করেছেন, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। উল্টো, অভিযোগ করার পর থেকেই তাদের ওপর চাপ বাড়তে থাকে। মাহবুব সরকার জিয়া ও তার সহযোগীরা তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিলে তারা প্রাণভয়ে আতংক ও উৎকন্ঠার মধ্যদিয়ে দিনাতিপাত করছেন। এখন তারা নিজেদের শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানায়, এই অবৈধ ড্রেজিংয়ের পেছনে মাহবুব সরকার জিয়ার সঙ্গে একটি শক্তিশালী চক্র জড়িত। এর মধ্যে কিছু অসাধু সাংবাদিক, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও রয়েছেন। তাদের মদদেই জিয়া নির্ভয়ে এই অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগের পর যখন লোক দেখানো ব্যবস্থা হিসেবে ড্রেজারের পাইপ ভাঙচুর করা হয়, তখন রাতের অন্ধকারে আবার তা সচল হয়ে ওঠে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ড্রেজার মালিক মাহবুব সরকার জিয়ার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খান বলেন, ‘ড্রেজার দিয়ে কৃষি জমি কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। এ বিষয়ে আমরা একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি এবং ড্রেজারের পাইপ ভেঙে দিয়েছি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে তারা আবারও এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।’