একসময় দেশের সবচেয়ে নির্মল বায়ুর শহর হিসেবে পরিচিত রাজশাহী এখন ভয়াবহ বায়ুদূষণের শিকার। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যানুযায়ী, রোববার সকাল ৯টায় রাজশাহীর বায়ুমান সূচক (একিউআই) ১৬২- যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। একই সময়ে রাজধানী ঢাকার একিউআই ছিল ১৩৪।

রোববার বিশ্বের ১২৪টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান ছিল ১২তম। সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার একিউআই ছিল ১৩৪, যা সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত। তবে রাজশাহী (একিউআই ১৬২) ও রংপুর (একিউআই ১৫৭)- এই দুটি শহরের বাতাস ঢাকার চেয়েও বেশি দূষিত। ২০১৬ সালে রাজশাহী বিশ্বের দূষণ নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সফল শহরগুলোর মধ্যে প্রথম স্থানে ছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০১৪-২০১৬ সালের মধ্যে রাজশাহীর বাতাসে ভেসে থাকা ক্ষতিকর বস্তুকণার পরিমাণ ৬৭ শতাংশের বেশি কমেছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইটভাটার ওপর কড়াকড়ি, ব্যাপক সবুজায়ন ও ব্যাটারিচালিত যানবাহনের বিস্তার ছিল এ সাফল্যের মূল কারণ। কিন্তু এখন শুকনো মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই রাজশাহীর বায়ুমান খারাপ থাকে। সম্প্রতি প্রকাশিত আইকিউএয়ারের ‘বৈশ্বিক বায়ুমান প্রতিবেদন ২০২৪’-এ বলা হয়েছে, বায়ুদূষণে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ বাংলাদেশ। আর নগর হিসেবে বিশ্বের তৃতীয় দূষিত শহর ঢাকা। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ ছিল, আর ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট, রাজধানীর বাইরেও ভয়াবহভাবে দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। আগে ঢাকার তুলনায় অন্যান্য অঞ্চলের বাতাস কিছুটা নির্মল থাকতো, কিন্তু এবারের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে রাজশাহী, রংপুরসহ অন্যান্য শহরের দূষণের মাত্রাও প্রায় ঢাকার সমান। পরিবেশবিদরা বলছেন, দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের জনস্বাস্থ্য আরো বড় সংকটের মুখে পড়বে। বিশেষ করে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ, শিল্প-কারখানার দূষণ কমানো এবং সবুজায়নের উদ্যোগ জোরদার করা প্রয়োজন।