তৌফিক রুবেল, দাউদকান্দি (কুমিল্লা): অভাব থেকে স্বপ্ন, আর স্বপ্ন থেকে সাফল্যÑ পথ পেরিয়ে মৎস্যখাতে জাতীয় স্বর্ণপদক অর্জন করেছেন কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুর সিঙ্গুলা গ্রামের সন্তান রহমত আলী। মাছ চাষের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তোলা এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙা করার অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি এ সম্মান অর্জন করেন।
রহমত আলী উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের মরহুম হাজী নায়েব আলীর সন্তান। জীবনের শুরুটা ছিলো নানা চ্যালেঞ্জে ঘেরা। পরিবারের আর্থিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে তিনি বেছে নেন মাছ চাষকে। হাতে ছিল সীমিত পুঁজি, কিন্তু ছিল অকৃত্রিম পরিশ্রম আর স্বপ্নপূরণের জেদ। শুরুটা ছিল ছোট আকারে, কিন্তু ধীরে ধীরে তাঁর উদ্যোগই আজ রূপ নিয়েছে ‘রহমত ফিসারিজ’-এ।
২৫ বছরের নিরলস পরিশ্রমে এখন তাঁর মাছের প্রজেক্টে কাজ করছেন প্রায় ৬০ জন শ্রমিক। শুধু কর্মসংস্থানই নয়, তাঁর প্রচেষ্টায় অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি মৎস্য উদ্যোক্তা। কেউ কেউ ক্ষুদ্র পুকুর থেকে শুরু করে এখন লাখো টাকার ব্যবসা করছেন রহমত আলীর অনুপ্রেরণায়।
সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর চীণ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাত থেকে স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন রহমত আলী। পদক হাতে নিয়ে তাঁর অনুভূতি ছিল আবেগঘন- “এ অর্জন শুধু আমার নয়, বরং দাউদকান্দি ও কুমিল্লার মানুষের সম্মিলিত গৌরব।”
এলাকাবাসীর মতে, রহমত আলী শুধু একজন সফল উদ্যোক্তা নন, বরং একজন দিকনির্দেশকও। তাঁর হাত ধরে অনেক বেকার যুবক আজ স্বাবলম্বী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়ে তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ। অনেকে মন্তব্য করছেন, “রহমত আলীর এই অর্জন কুমিল্লার মানুষের সম্মিলিত অর্জন।”
নিজের অর্জনে তিনি থেমে নেই। রহমত আলীর লক্ষ্য, আরও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাছ উৎপাদন বাড়ানো এবং নতুন প্রজন্মকে মৎস্য খাতে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা।