পাবনা সংবাদদাতা : মরহুম আলহাজ্ব রাজা হাজীর পরিবারের সাড়ে ১২ বিঘা মূল্যবান সম্পত্তি প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী মাহফুজা রশিদ লাকি। সম্প্রতি প্রেসক্লাব পাবনায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাহফুজা রশিদ লাকি বলেন, পাবনা শহরের সুপরিচিত সমাজসেবক আলহাজ্ব রাজা হাজী ২০১১ সালে মারা যান। একই বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় তাদের একমাত্র ছেলে। এরপর চার প্রতিবন্ধী কন্যা সন্তানকে নিয়ে তিনি নিদারুণ কষ্টে দিন যাপন করতে থাকেন। রাজা হাজীর নেওয়া ব্যাংক ঋণ পরিশোধের জন্য তিনি নিজেই হাল ধরেন এবং সম্পত্তি বিক্রি করে দেন প্রায় দেড় কোটি টাকা।

পরবর্তীতে পাবনা শহরের একটি মার্কেট বহুতল ভবনে রূপান্তর এবং ঢাকায় একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করেন তিনি। তবে প্রস্তাবিত ৫ কোটি টাকার স্থলে মাত্র ৩ কোটি টাকা ঋণ পান, যা ভবন নির্মাণ ও ব্যবসার জন্য যথেষ্ট না হওয়ায় তিনি বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হন। এক পর্যায়ে ব্যাংকের কাছে তিনি ডিফল্টার হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।এ অবস্থায়, হেমায়েতপুরের সাবেক চেয়ারম্যান দবির উদ্দিন খানের ছেলে মশিউর রহমান খান আজাদ কৌশলে তার আর্থিক দুরবস্থার সুযোগ নেন। তিনি মাহফুজা রশিদ লাকির কাছে প্রতিশ্রুতি দেন যে, তিনি ব্যাংক থেকে ৬ কোটি টাকা ঋণ ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন। প্রলোভন দেখিয়ে মাত্র ৫৯ লক্ষ টাকার সহযোগিতা দিয়ে তার প্রায় ৮ কোটি টাকা মূল্যের সাড়ে ১২ বিঘা জমি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মাহফুজা রশিদ লাকি অভিযোগ করে বলেন, রেজিস্ট্রির দিন তাকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ঘিরে একটি কক্ষে আটকে রাখে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। পরবর্তীতে তিনি কোনো ঋণ পাননি, বরং এখন জানতে পারছেন সেই জমি বায়নাদারদের কাছে বিক্রি করে প্লট আকারে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও প্রতারক আজাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এমনকি প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও তিনি কোনো সুরাহা পাননি।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মাহফুজা রশিদ লাকি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন এবং তার সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

উল্লেখ্য, সংবাদ সম্মেলনে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।