গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়িতে গত বছরের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় পুলিশের গুলীতে নিহত কলেজ ছাত্র হৃদয়ের লাশ উদ্ধারে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তুরাগ নদীর কড্ডা এলাকায় অভিযান চালায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার নদীপথে ভাটির দিকে সাঁতরিয়ে চলে এ উদ্ধার অভিযান, তবে লাশের সন্ধান মেলেনি। অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ, মহানগর পুলিশের সদস্যরা এবং নিহত হৃদয়ের স্বজনরা। নিহত হৃদয় (২০) টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার আলমগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি মেহনগর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি গাজীপুর কোনাবাড়ীতে অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের খরচে সহায়তা করতেন। গত বছরের ৫ আগস্ট গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের গুলীতে নিহত হন তিনি। নিহতের ফুপাতো ভাই ইব্রাহিম এ ঘটনায় কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ প্রায় ৩শ’ জনকে আসামী করা হয়। মামলার একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের কনস্টেবল আকরাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম জানান, হৃদয় হত্যাকা-ে এ পর্যন্ত পুলিশ সদস্যসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সম্প্রতি ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত একটি মাইক্রোবাসের চালককে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কড্ডা এলাকায় অভিযান চালানো হয়, যেখান থেকে হৃদয়ের লাশ নদীতে ফেলা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন জানান, চার সদস্যের একটি প্রশিক্ষিত ডুবুরি দল সকাল ১০টা থেকে কড্ডা এলাকায় অভিযান শুরু করে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত তুরাগ নদীতে অভিযান চললেও লাশের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।