বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার ভারতের কাছে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি। যে কারণে উত্তর অঞ্চলের তিস্তা এলাকা মরুভূমি হতে যাচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তার পানির হিস্যা আদায়ে জাতিসংঘের কাছে যাবে এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে।
গতকাল মঙ্গলবার তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ৪৮ ঘন্টার লাগাতার অবস্থান কর্মসূচী ও জনতার সমাবেশ সমাপনি অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে তারেক রহমান বলেন, ৫ আগস্ট যে স্বৈরাচার ভারত পালিয়ে গেছে সেই খুনি প্রায় বলতো “ভারতকে যা দিয়েছি ভারত তা কোনদিন ভুলতে পারবে না”। আজ ভারত শেখ হাসিনাকে ঠিকই ভুলে যায়নি। ভারতের সম্পর্ক ছিল শেখ হাসিনার সাথে বাংলাদেশের সাথে নয়।
অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ২/১ জন উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একেক রকম বক্তব্য দিচ্ছেন, সে কারণে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন ফ্যাসিবাদ আবার যেন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত না হয়। পাশাপাশি সরকার কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক আইন মতে, তিস্তার পানি আমাদের অধিকার। প্রতিবেশী দেশের অপ্রতিবেশী আচরণের কারণে আজ আমরা আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। আজ ৫০ বছর হলো ফারাক্কায় পানির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে তিস্তাসহ অনেক নদী এখন ধুধু বালুচর। এতে প্রতিবছর যেমন ৩/৪ বার বন্যা হয় তেমনি লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়।
তারেক রহমান আরও বলেন, ১৬ বছরে নদী কমিশনকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের স্বার্থে। আমরাও প্রতিবেশী দেশের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখতে চাই তবে সেই সম্পর্ক হবে দেশের স্বার্থে। ভারত যদি আমাদের পানির ন্যায্য অধিকার না দেয় তাহলে দেশের সবাইকে সাথে নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করবো এবং জাতিসংঘের কাছে যাবে।
পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তর অঞ্চলের লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা পাড়ের ১১ টি পয়েন্টে ৩ দিনব্যাপী জনতার সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন নামে একটি সংগঠন।
এ সমাবেশগুলোতে লক্ষ লক্ষ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। যার প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রীও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবীব দুলু। ২ দিনব্যাপী এ কর্মসূচীর ১৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে উদ্বোধন করেন বিএনপি'র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার মধ্যরাতে এ কর্মসূচীর সমাপ্তি ঘটবে।
১১ টি পয়েন্টের বিভিন্নস্থানে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন বীর বিক্রম, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় পার্টি (জেপি) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।