ঝিনাইদহ সংবাদদাতা : প্রায় ১ যুগ ধরে গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত ঝিনাইদহের বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতার পাশাপাশি শিল্প মালিকদের অনাগ্রহের কারণে এই গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত ঝিনাইদহের বিসিক।
মুল ডিপোতে প্রাকৃতিক গ্যাস আসার পরও সংযোগ লাইনের অভাবে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে না সেখানে। ফলে শিল্প মালিকদের বিদ্যুৎ বিল বাবদ গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
ঝিনাইদহ বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, ইতোমধ্যে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানী টিমিটেডের সঙ্গে দুইবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তারা নিজ খরচে গ্যাস সংযোগ লাইন তৈরি করতে বলেছে। এতে ঝিনাইদহ বিসিকের শিল্পকারখানার মালিকরা রাজি নয়। তাছাড়া গ্যাস চালিত মেশিন কেনার সামর্থ্য অনেক মালিকের নেই। কারখানা মালিকরা বেশি খরচ করে গ্যাস চালিত মেশিন বসাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এ কারণে ঝিনাইদহ বিসিকে গ্যাস সংযোগ বিলম্ব হচ্ছে।
ঝিনাইদহ বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক সেলিনা রহমান মিনা জানান, ১৯৮৮ সালে ১৫.৭০ একর জমির উপর ঝিনাইদহ বিসিক গড়ে ওঠে। ওই বছরেই জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। ১৯৯৮ সাল থেকে প্লট বরাদ্দ শুরু হয়ে ২০১২ সালে শেষ হয়। বিসিকে মোট প্লট আছে ১০১টি। এই ১০১টি প্লটের উপর একটি মসজিদ, প্রশাসনিক ভবনসহ ৪৬টি শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে।
গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেডের ঝিনাইদহ টাউন বর্ডার স্টেশনের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহকারী ব্যাবস্থাপক মীর মোবাশ্বের আলী মিন্টু জানান, ২০০৯ সালে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস লাইন স্থাপনের প্রস্তাব পাশ হয়। ২০১১ সাল থেকে এ অঞ্চলে জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়। জমি অধিগ্রহন ও ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের ৪১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ ও শৈলকুপার ৫২টি মৌজা থেকে ২৬ ফুট জায়গা নিয়ে মোট ১১৭ একর জমি অধিগ্রহণ গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেড।
তিনি জানান, ঝিনাইদহ জেলার উপর দিয়ে ৫২ কিলোমিটার গ্যাস লাইন তৈরী করা হয় এবং ২০১৪ সালে গ্যাস পাইাপ লাইন তৈরী শেষে পাইপে গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এখন পাইপে পর্যাপ্ত গ্যাস মজুদ রয়েছে। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানী লিমিটেডের একটি সুত্র জানায় ঝিনাইদহ বিসিকের ব্যবসায়ীদের মধ্যে গ্যাস সংযোগ নেওয়ার কোন ইচ্ছা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ পর্যন্ত এক মিলিয়ন গ্যাসের চাহিদা চেয়ে একটি মাত্র আবেদন জমা পড়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও নেই কোন উচ্চবাচ্য।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক সেলিনা রহমান জানান, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানীর কর্মকর্তারা ঝিনাইদহে এসেছিলেন। তারা ডিপো করবে বিসিক থেকে অনেক দুরে। সেখান থেকে গ্যাস লাইন বিসিক পর্যন্ত আনতে ব্যবসায়ীদের নিজেদের অর্থ ব্যয় করতে হবে। এতে ব্যবসায়ীরা রাজি হননি। তিনি আরো জানান, আমরা সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানীকে বলেছি ডিপোটা বিসিকের আশেপাশে করতে। নিকটে গ্যাসের ডিপো করা হলে বিসিকের সব ব্যাবসায়ীরা গ্যাস নিতে পারবে।