সাঁথিয়ায় শহীদ আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ইচ্ছা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর শহীদ মাওলানা নিজামী ফাউন্ডেশন। বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী স্মরণে ২০১৭ সালে সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে শহীদ মাওলানা নিজামী ফাউন্ডেশন গঠিত হয়েছে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সাঁথিয়া বেড়ায় এলাকায় জনসাধারণের মধ্যে এসব সেবা প্রদান করে চলছে। সংগঠনের উদ্যোগে সাঁথিযয়া বালিকা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে শুক্রবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সন্তান, শহীদ মাওলানা নিজামি ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও ৬৮ পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার আংশিক) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ব্যারিস্টার ড.নাজিবুর রহমান মোমেনের। সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন পাবনা জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে ১৬ জন ডাক্তার এলাকার আগত বিভিন্ন রোগীদের দিনব্যাপী আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন পরে বিনামূল্যে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এম এ সাত্তার,শহীদ আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ডাক্তার নাইমুর রহমান খালেদ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের নবজাতক ও শিশু কিশোর বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোহাম্মদ লিয়াকত আলী, প্রসূতি মা, শিশু এবং গাইনি রোগে অভিজ্ঞ ডাক্তার ফাতেমা পারভীন স্বর্ণা, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ও হেড নেক সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা: মোহাম্মদ কাজী মুন্নাফুর রহমান,সার্জারিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ মোঃ আব্দুর রহিম খান, পাবনা জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, প্রস্তুতি ও গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডাক্তার মোছাম্মদ রওশন আরা খাতুন রিতা, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঢাকার রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেডিসিন অ্যাজমা ও বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মোহাম্মদ লুৎফর রহমান, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কিডনি ডিজিজ ইউরোলজির কনসালটেন্ট, মেডিসিন ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা:মোঃ আব্দুস শুকুর, পাবনা জেনারেল হাসপাতালের লিভার পরিপাকতন্ত্র মেডিসিন ও এন্ডোস্কোপিক ইন্টারভেশনাল স্পেশালিস্ট ডাক্তার মোহাম্মদ নাজমুল হক, আল আমানা মারুফ পাবনার চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা: মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঢাকার কনসালটেন্ট ডাক্তার মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, পাবনা জেনারেল হাসপাতালের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ও হেড নেক সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ মাইদুল ইসলাম,স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল এর মেডিকেল অফিসার ডাক্তার তাহান আল জোহানী, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতাল ঢাকার মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার নূরে মাসুম চিকিৎসা প্রদান করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আনিসুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর ও সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা মোখলেসুর রহমান, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আব্দুস সাত্তার, শহীদ মাওলানা নিজামী ফাউন্ডেশন এর সেক্রেটারি ও নিজামিপুত্র ডাক্তার খালেদ হাসান। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাঁথিয়া পৌর জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক কামরুজ্জামান, পাবনা জেলা জামায়াতের যুব বিভাগীয় সেক্রেটারি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রেসক্লাব পাবনার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, জামায়াত নেতা মেহেদী হাসান, মাহাদি হাসান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের পাবনা জেলা সভাপতি মুন্নাফ হোসেন, ছাত্র শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, এদেশের সাধারণ মানুষ বহুদিন ধরে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের মত গুরুত্বপূর্ণ খাতেও তারা অবহেলিত। শহীদ আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চেয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় শহীদ মাওলানা নিজামী ফাউন্ডেশন তার মনের ইচ্ছা পূরণের লক্ষ্যে সা
সাঁথিয়া-বেড়া এলাকায় বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে। সাধারণ মানুষেরা শহীদ আমিরে জামায়াতকে ভালোবাসতেন আমীরে জামায়াতও সাধারণ মানুষকে কাছে টেনে নিতেন, তিনি মানুষের দুঃখ-দুর্দাশার কথা শুনতেন এবং তা লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।
অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল আরো বলেন, স্থানীয় জনসাধারণের সহযোগিতা পেলে আগামীতে শহীদ মাওলানা নিজামি ফাউন্ডেশন অত্র অঞ্চলের সকল ধরনের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালিত করতে পারবে।
অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগত রোগী ও সুধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শহীদ আমীরে জামায়াতের অসম্পূর্ণ কাজ তার সুযোগ্য সন্তান ব্যারিস্টার ডক্টর নাজিবুর রহমান মোমেন সহ অন্যান্যরা আপনাদের সাথে নিয়ে সম্পূর্ণ করবে ইনশাল্লাহ।
সাঁথিয়া উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোখলেসুর রহমান বলেন, সাঁথিয়া বেড়া এলাকার মানুষের সহযোগিতায় শহীদ মাওলানা নিজামী ফাউন্ডেশনের কাজ এগিয়ে যাবে। ফলে অত্র অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নমূল কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে, এজন্য ফাউন্ডেশনের সভাপতি নাজিবুর রহমান মমিনকে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয় করতে হবে ফলে কাজের সুযোগ ও গতি বৃদ্ধি পাবে।
শহীদ নিজামী ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও পাবনা-১ (সাথিয়া বেড়ার আংশিক) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি প্রার্থী ড. ব্যারিস্টার মাওলানা নাজিবুর রহমান মোমেন বলেন, আমার শহীদ পিতা সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চেয়েছেন। তাদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে কাজ করাই ছিল তাঁর আজন্ম স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই শহীদ নিজামী ফাউন্ডেশনের অগ্রযাত্রা শুরু করেছি। এই ফাউন্ডেশনকে সাধারণ মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।”
নিজামী পুত্র ডাক্তার নাইমুর রহমান খালেদ বলেন, শহীদ মাওলানা নিজামী ফাউন্ডেশন এর মাধ্যমে এলাকায় স্বাস্থ্য সেবা দেবার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমার মাধ্যমে এলাকায় স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের, তিনি আমাকে বলেছিলেন কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে আমরা তার এই আশা পূরণ করতে পারেনি। বর্তমানে সুযোগ হয়েছে আমরা স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।, এছাড়া গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে তার শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাবার চেষ্টা করছি।
আগামীতে অত্র অঞ্চলের পশু চিকিৎসার জন্য মেডিকেল সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে এছাড়া অসহায় দরিদ্রদের মধ্যে সময়োপযোগী সকল ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, বাবার চিন্তা স্বপ্ন ধ্যান-ধারণা বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধপরিকর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিছু রোগীদের হেলথ কার্ড সরবরাহ করা হয় এ কার্ডের মাধ্যমে রোগীরা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৫ থেকে ৫০% সাশ্রয় মূল্যে চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন। দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে ৮০০ থেকে ৯০০ বিভিন্ন ধরনের রোগীর চিকিৎসা প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা নারী-পুরুষেরা সেবায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এধরনের সেবা অব্যাহত রাখার দাবি জানান। অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণের বিপুল উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।