রাশেদ, সারিয়াকান্দি (বগুড়া) : শীতকাল মানেই আবহমান গ্রাম বাংলার রান্নাঘরে পুষ্টিকর তরকারিতে কুমড়ো বড়ির সমাহার। আর এই সুস্বাদু সবজি জাতীয় খাবার তৈরিতে বগুড়ার সারিয়াকান্দির সাহাপাড়ার নারী শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীতের শুরুতেই কুমড়ো বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে, যা একদিকে যেমন এলাকার ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে, তেমনি গ্রামীণ অর্থনীতিতেও আনছে গতি। সাহাপাড়ায় শতাধিক নারী শ্রমিক কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। শীতের মৌসুম এলেই তাদের ব্যস্ততা শুরু হয় কাক ডাকা ভোর থেকে, যা চলে সকাল ৯টা পর্যন্ত এবং এরপর আবার শুরু হয়ে চলে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত। বংশ পরম্পরায় সাহা পাড়ার নারীরাই এই কাজের প্রধান কারিগর। একজন শ্রমিক দৈনিক গড়ে ৪ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত কুমড়ো বড়ি তৈরি করে থাকেন।

সুস্বাদু এই বড়ি তৈরিতে একমাত্র মাষকলাই ব্যবহার করা হয়। এই কলাই চরাঞ্চলের পতিত জমিতে আবাদ করা হয়।

বড়ির উৎপাদন শেষে পুরুষরা তা হাট-বাজারে তোলেন। মান ভেদে প্রতি কেজি কুমড়ো বড়ি ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।

স্থানীয় সুমন কুমার সাহা জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে এই মৌসুমে ওই দামে বিক্রি করে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা বিকি-কিনির আশা করা যায়। এই বিপুল পরিমাণ বেচাকেনার আশা এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে সুদিনের বার্তা নিয়ে এসেছে। কুমড়ো বড়ি তৈরি এখন শুধু একটি মৌসুমী কাজ নয়, বরং এলাকার বহু পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দির সাহাপাড়ার এই কুমড়ো বড়ি একদিকে যেমন রসনাপ্রিয়দের জিহ্বায় জল এনে দেয়, তেমনি শত শত নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে স্থানীয় অর্থনীতিকে মজবুত করছে। তাদের এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প কর্মসংস্থান এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতির মানচিত্রে এক উজ্জ্বল নাম যোগ করেছে।