দুর্নীতির তদন্ত বা অনুসন্ধান বাধাগ্রস্ত করতে কেউ চাপ প্রয়োগ করলে তাদের নাম প্রকাশ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সেগুনবাগিচায় সংস্থাটির সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, যারা চাপ প্রয়োগ করবে, আগামীতে তাদের নাম প্রকাশ করে দেব।
দুদক চাপ অনুভব করে কি না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, যিনি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, তার ওপরই চাপ বেশি আসে। দুর্নীতিগ্রস্ত না হলে, ঘাড় সোজা থাকলে চাপ কম আসবে। আপনাকে যারা চাপ দেবে, তারাও চিন্তা করবে চাপ দেবে কি না। আগামী দিনগুলোতে যারা দুদকে অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করবে, আমরা তাদের নাম প্রকাশ করব।
দুদক নখ-দন্তহীন বাঘ কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, দাঁত যতটা তীক্ষè হওয়ার দরকার ছিল, ততটা তীক্ষè এখনো হয়নি। নখও পুরোপুরি গজায়নি। মাঝামাঝি একটা পর্যায়ে আছে।
দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের দুর্নীতি প্রতিরোধ করা ‘দুদকের একার কাজ নয়’ বলে মনে করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। দুর্নীতির শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করে তিনি বলেন, আপনি ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করলেন, এক কোটি টাকা এদিক-সেদিক করলেন, নয় কোটিই টাকাই লাভ। তার চেয়ে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ১০০ কোটি টাকা দ- দেওয়া হলে সেটা আর করবে না।
নির্বাচনি হলফনামা দুদদকে আগে দেওয়ার কথা তুলে ধরে সংস্থাটির চেয়ারম্যান আবদুল মোমেন বলেন, যখন সম্পদ বিবরণী (হলফনামা) দাখিল করা হয়, দাখিল করা ও চূড়ান্ত করার মাঝামাঝি সময় খুবই কম। সরকার যদি ঘোষণা দিত, নির্বাচনি হলফনামা আগে দুদককে দিতে হবে, তাহলে আমরা একটা টাস্কফোর্স গঠন করতাম। আমরা হয়ত সবারটা করতে পারতাম না। এই দেশের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত নয়। বড় বড় সন্দেহভাজনদের বিষয়ে আগে পরীক্ষা করে ইসিকে দিতে পারতাম।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের হাতে সময় খুবই কম। আপনারা ‘হুইসেল ব্লো’ করবেন, আমরা আমাদের শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে সেটা পরীক্ষা করার চেষ্টা করব। ভোটের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ভোটে কালো টাকার দৌরাত্ম্য আগে দেখেছি। এবারও হয়ত হবে।
নির্বাচনের পরেও হলফনামা পরীক্ষা করা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, না হওয়ার কোনো কারণ নেই। ১০০ বার করব। ‘উই আর নট শাই’।
মতবিনিময় সভায় দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবর আজিজী, হাফিজ আহসান ফরিদ এবং সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীম উপস্থিত ছিলেন।