ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি ও ঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী দেলাওয়ার হোসেন বলেছেন, ঢাকা, জাহাঙ্গীর নগর, চট্টগ্রাম এবং সর্বশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির বিশাল বিজয় অর্জন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা শিবিরের হাতে যে রেজাল্ট তুলে দিয়েছে, সে রেজাল্টই প্রমাণ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও একইভাবে ভূমিধস বিজয় লাভ করবে। কারণ ছাত্র-ছাত্রীরা যেভাবে বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে নিরাপদ মনে করেছে, ঠিক সেভাবে সারা দেশের মানুষও জামায়াতে ইসলামীকে নিরাপদ মনে করে। সুতরাং আগামী দিনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা জামায়াতে ইসলামীই দিতে পারবে। নিরাপদ, সুখী, সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য এদেশের মানুষ ব্যালট বিপ্লবের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে আগামী দিনে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে, ইনশাআল্লাহ।

গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে এগারটায় ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার মাঠে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি। শ্রমিকদের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শ্রমিকদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। আল্লাহ শ্রমিকদের বন্ধু হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের বন্ধু হতে পারে না শ্রমিকরা। দুর্নীতিবাজ, সুদখোর, ঘুষখোর, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজরাই আমাদের দেশের নেতাদের বন্ধু হয়। অথচ শ্রমিকরা রাজনীতিবিদদের বন্ধু হতে পারে না। তাদের ধারেকাছেও যেতে পারে না। শুধুমাত্র ইসলামী শাসন ব্যবস্থা না থাকার কারণে, একটি মানবিক ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে, কুরআন ও সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠিত না থাকার কারণে আজ শ্রমিকরা ন্যায় বিচার পাচ্ছে না। তারা মর্যাদা ও সম্মান পাচ্ছে না। আগামী দিনে জামায়াত রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে একটি কল্যাণমূলক মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তুলবে। সুশাসন ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ও সম্মান পাবে। শ্রমিকদের জন্য মুজুরী কাঠামো ও বোর্ড গঠন করা হবে। ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

দেলাওয়ার হোসেন বলেন, আমি আপনাদের ভাই, এই ঠাকুরগাঁওয়ের সন্তান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমাকে এই আসনে (ঠাকুরগাঁও-১) মনোনীত করা হয়েছে। আমাকে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে, নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংগঠনের নির্দেশনায় আমি এখানে আমাগী নির্বাচনের জন্য কাজ করছি। আমি শুধুমাত্র এমপি হওয়ার জন্য নয়, রাজনীতিবিদ হিসাবে নয়, আপনাদের একজন সন্তান, ভাই, বন্ধু, সহপাঠী হিসাবে আমি ছাত্রজীবন থেকেই এলাকার মানুষদের জন্য কাজ করে আসছি। যার অংশ হিসাবে, সামর্থহীন পরিবারে টিউবওয়েল, মসজিদে ওযুখানা স্থাপন, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে গবাদিপশু, মেলাই মেশিন, রিক্সা-ভ্যান বিতরণ, অসহায় পরিবারে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেয়া, অসুস্থদের চিকিৎসা সহায়তা দেয়াসহ বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক কাজ করে আসছি। যেখানে, দল, মত বা ধর্মের বিচার না করে আমি সকলের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। আপনারা যদি আগামী দিনে আমাকে এমপি নির্বাচিত করে সংসদে পাঠান, তাহলে সরকারী বরাদ্দের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে এলাকার উন্নয়ন করা হবে। এই এলাকার রাস্তাঘাট পাকাকরণ, ব্রীজ-কালভার্ট নির্মাণ, কৃষি ভিত্তিক শিল্প কারখানা স্থাপন, মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা, যুব প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপন, বন্ধ বিমান বন্দর চালুকরণ সহ জনকল্যাণ মূলক উন্নয়ন কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী অধ্যক্ষ কফিল উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনর রশিদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ঠাকুরগাঁও জেলা আমীর অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হাকিম, বর্তমান জেলা আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন প্রধান, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারি পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাসেম বাদল, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মোহাম্মদ আলমগীর, শ্রমিক কল্যাণের জেলা সভাপতি মতিউর রহমান। শহর জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা শামসুজ্জামান শাহ শামীমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে জামায়াত, শিবির ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিভিন্ন স্তরের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।